বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার বিষয়ে নতুন একটি নীতিমালা ঘোষণা করেছে। চলমান করোনা সংকটে ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি বিবেচনা করে লভ্যাংশ দেয়ার এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে ২০২০ সালের জন্য শেয়ারের বিপরীতে ডিভিডেন্ড ঘোষণার নীতিমালা সংক্রান্ত ওই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি দেশে কার্যরত সকল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বর্তমানে দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে করোনামুক্ত রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক ও নীতি সহায়তামূলক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে এনে জাতীয় অগ্রগতিকে করোনা সংক্রমণের পূর্ববর্তী ধারায় উপনীত করার কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে আসন্ন বছরগুলোতে ব্যাংকসমূহের মূলধন কাঠামো অধিকতর সুসংহত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।

এজন্য ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করে শেয়ারের বিপরীতে ডিভিডেন্ড প্রদানের ক্ষেত্রে এখন থেকে নিচের নীতিমালা অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছেঃ

ক) (১) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ইতঃপূর্বে গৃহীত ডেফারেল সুবিধার অধীনে নয় বা বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষে এরূপ কোন ধরনের ডেফারেল সুবিধা গ্রহণ ব্যতিরেকে যে সকল ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫% ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৫.০% বা তার বেশি মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সে সকল ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ১৫% নগদসহ মোট ৩০% ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

(২) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ইতঃপূর্বে গৃহীত ডেফারেল সুবিধার অধীনে নয় বা বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষে এরূপ কোন ধরনের ডেফারেল সুবিধা গ্রহণ ব্যতিরেকে যে সকল ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫% ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৩.৫% হতে অনূর্ধ্ব ১৫.০% মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে সে সকল ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ১২.৫% নগদসহ মোট ২৫% ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে ।

(৩) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ইতঃপূর্বে গৃহীত ডেফারেল সুবিধার অধীনে নয় বা বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষে এরূপ কোন ধরনের ডেফারেল সুবিধা গ্রহণ ব্যতিরেকে যে সকল ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫% মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে সে সকল ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ৭.৫% নগদসহ মোট ১৫% ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে । এরূপ যে সকল ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণের পরিমাণ ১১.৮৭৫% এর কম হবে সে সকল ব্যাংকের ডিভিডেন্ড ঘোষণার ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ খ(৩) এ উল্লিখিত পরিমাণ অনুসৃত হবে।

খ) (১) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিবেচ্য পঞ্জিকাবষের্র জন্য গৃহীত বা ইতঃপূর্বে গৃহীত ডেফারেল সুবিধা বাদে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে যে সকল ব্যাংকের মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১২.৫% বা তার বেশি হয় সে সকল ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, সর্বোচ্চ ৬.০% নগদসহ মোট ১২% ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

(২) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিবেচ্য পঞ্জিকাবষের্র জন্য গৃহীত বা ইতঃপূর্বে গৃহীত ডেফারেল সুবিধা বাদে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে যে সকল ব্যাংকের মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫% হতে অনূর্ধ্ব ১২.৫% হয় সে সকল ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, সর্বোচ্চ ৫% নগদসহ মোট ১০% ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

(৩) প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বিবেচ্য পঞ্জিকাবষের্র জন্য গৃহীত বা ইতঃপূর্বে গৃহীত ডেফারেল সুবিধা বাদে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সে সকল ব্যাংকের ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ অন্যূন ১০.৬২৫% হতে অনূর্ধ্ব ১১.৮৭৫% হয় সে সকল ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, সর্বোচ্চ ৫% স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশ জারি করা হলো এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে সমাপ্ত বছরের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণার ক্ষেত্র হতে সকল তফসিলি ব্যাংকের জন্য প্রযোজ্য হবে বলেও প্রজ্ঞাপণে উল্লেখ করা হয়।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031