স্বামী পরিত্যক্তা ৭১ বছর বয়সী উর্মিলা রাণীর জীবনে সুখ সইল না বরগুনার তালতলী উপজেলার বেহেলা গ্রামের । গৃহহীন এই বৃদ্ধাকে সরকারের পক্ষ থেকে যে ঘর উপহার দেয়া হয়েছে, তার দেয়াল ধসে পড়েছে দুই বার। উদ্বোধনের ১২ দিনের মাথায় গত বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো তার বসতঘরেরর দেয়াল ভেঙে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় যার জমি আছে, ঘর নেই, তার জমিতে ঘর করে দিতে বরগুনার তালতলী উপজেলায় ১৭ কোটি এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ টাকা দিয়ে তালতলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ১০০ ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। তদারকির দায়িত্বে ছিলেন তালতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুনু বেগম। তালতলী উপজেলার করইবারীয়া ইউনিয়নের বেহেলা গ্রামের মৃত রাজেশ্বরের স্ত্রী ঊর্মিলা রাণী এই ঘরটি গত ২৩শে জানুয়ারি বরাদ্দ পান।
দ্বিতীয় দফায় গত বুধবার সকালে দেয়াল ভেঙে পড়লে তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘরটির দেয়াল মাটিতে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও সিমেন্ট কম দিয়ে মিস্ত্রিরা কোনোরকমে ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। এ জন্যই দেয়াল ভেঙে পড়ছে।
রাজেশ্বরের স্ত্রী ঊর্মিলা রাণী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোরে একখান ঘর দেছে। ঘরখান দুইফির ভাইঙ্গা গ্যাছে। এই ঘরের নিচে চাপা পইড়া মোর জীবনডাও যাইতে পারে। মুই এই ঘর চাই না। যে ঘরে থাকলে মরণও অইতে পারে। ঘরের মালামাল আনার সময় মোর কাছ দিয়া ভাড়া বাবদ ৯ হাজার টাকাও নিছে ওরা।
তালতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুনু বেগম বলেন, যারা মালামাল পরিবহন করেছে তারা টাকা নিয়েছে। এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেন।
আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম তালতলী উপজেলায় গৃহ নির্মাণ ও তদারকির কথা অস্বীকার করেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বেহালা গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ঊর্মিলা রাণীর নির্মাণাধীন গৃহের দেয়াল ভাঙার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারকে দ্রুত ভেঙে পড়া ঘরের দেয়ালের মালামাল সরিয়ে নতুন করে টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। ঊর্মিলা রাণীর কাছ থেকে নেয়া ৯ হাজার টাকাও ঠিকাদারকে ফেরত দিতে বলা হয়েছে।