বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্ট্যাডিজ (সিজিএস) কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি ও সুশাসনের ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে । প্রতিষ্ঠানটি বলছে, করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের নানা কর্মসূচিতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাব ও দুর্নীতি লক্ষ্য করা গেছে। এসব কর্মকাণ্ড অংশগ্রহণমূলকও হয়নি। স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি ও দেশে গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব একই সূত্রে গাঁথা। এভাবে করোনা সংকট রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সিজিএস’র পক্ষ থেকে বেশকিছু সুপারিশও রাখা হয়েছে। গতকাল ঢাকায় এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিজিএস। অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি’র সহযোগিতায় ‘সার্চিং ওয়েস ফরোয়ার্ড ফর বাংলাদেশ ইন দ্যা টাইম অব প্যানডেমিক: কোভিড-১৯ অ্যান্ড গভর্নেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক পলিসি ব্রিফ প্রকাশ করা হয়।
প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ বলেন, স্বাস্থ্যখাতে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে বলে সরকার প্রচার করেছে। কিন্তু কোভিড-১৯ আসার পর দেখা যাচ্ছে পর্যাপ্ত আইসিইউ নেই, করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণই সরকারের কাছে নেই। এতে বোঝা যাচ্ছে স্বাস্থ্যখাতে কার্যকর বিনিয়োগের অভাব রয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, করোনাকালীন সময়ে পর্যাপ্ত টেস্ট, চিকিৎসা সুবিধা পায়নি বহু নাগরিক। কিন্তু ভুক্তভোগীরা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ভয়ে তা প্রকাশ করতে পারেনি। এই আইন বাতিলের দাবি রেখে রাষ্ট্রকে আরো সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানান প্রফেসর আলী রীয়াজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আমেনা মোহসিন বলেন, করোনাকালীন সময়ে সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে। যৌন হয়রানি, পারিবারিক সহিংসতা, শিশু নির্যাতন এমনকি আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা লক্ষণীয় ছিল।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। কিন্তু একই সঙ্গে একটা প্রজন্মের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। অটোপাসের মাধ্যমে যারা উত্তীর্ণ হলো তাদের মান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাবে। নির্বাচনে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের সুশাসনের ঘাটতি নতুন কিছু নয়। সাম্প্রতিক সময় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আমরা লক্ষ্য করেছি সবাই যেন জবাবদিহিতার বাইরে। এই ধরনের নির্বাচনকে আমি ১০-এর মধ্যে ৪ নম্বর দেব।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশের শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আইন শাসকদের স্বার্থে ব্যবহার হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লোকজন জনগণের টাকা লুট করছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে নাগরিকরা। আগে ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলতো। এখন আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে। সরকারি দপ্তরে শুধু সরকারি দলের লোকজন সব সুবিধা পায়।