ঢাকা : ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক চাল ব্যবসায়ীকে থানায় ধরে এনে । কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন চাল ব্যবসায়ী আশরাফ উদ্দিন। এ ঘটনার পর ওই চাল ব্যবসায়ী কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে ওসির বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এদিকে ওসির অপকর্মের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
অনিক ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী চাল ব্যবসায়ী আশরাফ উদ্দিন অভিযোগ করেন, ২৭ জুলাই রাত ১২টার দিকে কুমারখালী থানার ওসি জিয়াউর রহমান তেবাড়িয়া এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে ওসি তার গোডাউনে সরকারি চাল আছে কিনা জানতে চান। বিষয়টি অস্বীকার করলে ওসি কয়েকজন পুলিশকে নিয়ে রাতের বেলায় শহরের কলেজ মার্কেটের গোডাউনে গিয়ে অনুসন্ধান চালায়। কোনো সরকারি চাল না পাওয়া সত্ত্বেও ওসি তাকে আবারো থানায় নিয়ে আসে।
আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘রাতে তারা আমাকে মারধর করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে আমার কাছে ৪০ লাখ টাকা দাবি করে ওসি সাহেব। আমি এত টাকা দিতে পারব না জানালে তিনি গুলি করার হুমকি দেন। এরপর রাতেই ১০ লাখ টাকা ম্যানেজ করে ওসিকে দিয়ে আসি। পরে আরো ২০ লাখ টাকার একটি চেক দিই।’
আশরাফ আরো বলেন, ‘বিষয়টি আমি তাৎক্ষনিক স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রকে জানায়। ২৯ জুলাই কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি অবগত করি। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আমি ওসিকে দেওয়া আমার টাকা ফেরত পাচ্ছি না’।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তারা চেক দেওয়ার যে কথা বলছে সেটি ভুয়া। পুলিশ কখনও চেকে টাকা নেয় নাকি? এটা তো নাবালকে বিশ্বাস করবে না’।
তিনি বলেন, ‘বিগত ইউপি নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করায় তিনি আমার উপর ক্ষ্যাপা। তার এজেন্ডা ছিল ভোট চুরি করে পছন্দের প্রার্থীদের জেতাতে সহায়তা করা। আর নির্বাচনের পরদিন ভাংচুরের অভিযোগে পৌর চেয়ারম্যানের ভাইকে আটক করেছিলাম। এসব কারণে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে’।
কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান বলেন, ‘ওসি সাধারণ জনগণ, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছে। দীর্ঘদিন মানুষকে জিম্মি করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে। সম্প্রতি চাল ব্যবসায়ী আশরাফকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তিনি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে’।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘ব্যবসায়ী এসপি স্যারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি অবগত করেছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে’।