মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নভেম্বরে । এই নির্বাচনের আগেই সেখানকার ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী নির্বাচনের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে। তারা নির্বাচন শুরুর আগেই তাদের রাজনৈতিক শক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শন করতে থাকে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করতে থাকে। এর ফলে নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে- তা নিয়ে তারা সংশয় প্রকাশ করতে থাকে। সেনাবাহিনীর এমন হুমকি ও হুঁশিয়ারির ফলে মিয়ানমারে নতুন করে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের আশংকা আগে থেকেই দেখা দেয়। কিন্তু সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে সেনাবাহিনী। তার সেই প্রতিশ্রুতির পর মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা গিয়েছিল ।
করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংকটের মধ্যেও গত ৮ই নভেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা সত্ত্বেও সেখানে শতকরা ৭১.৭৫ ভাগ বৈধ ভোটার নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। মিয়ানমারের মোট ভোটার প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ। এসব ভোটার সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির প্রতি। ফলে জাতীয় নির্বাচনে আরো একবার ভূমিধস পরাজয়ের শিকার হয় সেনাবাহিনী মদতপুষ্ট ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)। তারা দাবি করে ভয়াবহ জালিয়াতি হয়েছে নির্বাচনে। এ অভিযোগে তারা পুলিশ স্টেশনে এবং নির্বাচন কমিশনে কয়েক হাজার অভিযোগ জমা দেয়। তাদের পক্ষে অবস্থান নেয় সেনাবাহিনী এবং তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে থাকে। পরিচালনা করে একটি তদন্ত। নির্বাচনের পর বেসামরিক অং সান সুটির নেতৃত্বাধীন সরকার যখন প্রথম পার্লামেন্ট অধিবেশন করতে যাবে, ক্ষমতা হাতে নিতে যাবে- ঠিক সেই মুহুর্তেই সেনাবাহিনী মিয়ানমারে ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা এনএলডির বিজয়কে অস্বীকার করেছে।