বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিংয়ের দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিভিন্ন বিভাগের ১১ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে । বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের মো. শিহাব ও মোহাম্মদ মশিউর রহমান, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের তামীম হোসেন ও রিজওয়ান রাশেদ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছালাউদ্দিন ইউসুফ ও রোজেন নূর, বাংলা বিভাগের শিমুল আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের সাকিল মাহমুদ, চারুকলা বিভাগের আকাশ হোসেন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফয়জুল ইসলাম এবং ইতিহাস বিভাগের সারোয়ার হোসেন।
গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে ওই ১১ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের আদেশ দেয়া হয়। ওই আদেশে বলা হয়, ৯ই জানুয়ারি ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বহিষ্কারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।
শিক্ষার্থীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের (তৃতীয় বর্ষ) শিক্ষার্থী এবং সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য হলের শিক্ষার্থী হয়েও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন।
এদের মধ্যে মো. শিহাবকে ২ বছর এবং বাকি ১০ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারের নির্ধারিত সময়ে এই শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল বা ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বহিষ্কারাদেশ শেষ হলে বঙ্গবন্ধু হল ছেড়ে তাদের বরাদ্দ হলে ওঠার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রক্টর কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২২শে জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বহিষ্কৃত এই শিক্ষার্থীরাসহ ৩০-৩৫ জন তৎকালীন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গণরুমে যান। র্যাগ দেয়ার একপর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে প্রথম বর্ষের ফয়সাল আলমকে ডেকে নিয়ে পরিচয় দিতে বলে তারা।
এ সময় ফয়সাল উচ্চ স্বরে হলের নাম বলতে না পারায় তাকে নানা রকম শারীরিক কসরত করতে বলেন বহিষ্কৃতরা।
ফয়সাল এতে অস্বীকৃতি জানালে তার ডান গালে পরপর দুটি থাপ্পড় দেন শিহাব। দ্বিতীয় থাপ্পড় দেয়ার পরেই ফয়সাল খিঁচুনি দিয়ে পড়ে যান এবং তার কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ফয়সাল বাকরুদ্ধ হয়ে যান এবং তার বন্ধুরা এবং দ্বিতীয় বর্ষের তিনজন মিলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান।