নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বিক্ষিপ্ত সহিংসতা, কেন্দ্র ভাঙচুর আর প্রাণহানিতে ভোট শেষ হলেও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন ‘ভালো’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেছেন, মাত্র দু-তিনটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের কাজ দুষ্কৃতকারীরা করে।
বুধবার বিকাল ৪টায় বন্দরনগরীতে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ভোট শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে কমিশনের প্রতিক্রিয়া জানাতে এসে এসব কথা বলেন সচিব মো. আলমগীর।
এদিন সকাল ৮টা থেকে ৭৩৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
ভোট চলাকালে চট্টগ্রামের লালখানবাজার, পাথরঘাটা আর পাহাড়তলীতে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নগরের খুলশী থানাধীন ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসেফ আমবাগান স্কুল কেন্দ্রের বাইরে গুলিতে একজন ও ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে ছুরিকাঘাতে নিহত হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী সাবের আহম্মদের কর্মী।
অপরদিকে পাথরঘাটায় ইভিএম মেশিন ভাঙচুর করার অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত এক কাউন্সিলর প্রার্থিকে আটক করে পুলিশ।
ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘তৃতীয় বিশ্বের অনেকে দেশেই নির্বাচনে ‘সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটে। সে হিসাবে আমি বলব, বরং কমই হয়েছে। মাত্র দু-তিনটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের দুষ্কৃতকারীরা এ কাজ করে।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে আমরা যে নির্বাচন দেখেছি, আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে বলব ভালো নির্বাচন হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশন সচিব আরও বলেন, ‘দুটো কেন্দ্রে শুধু কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক, যারা ইভিএমে ভোট হোক তা চায় না, তারা আক্রমণ চালিয়েছিল। ইভিএম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভোট স্থগিত করা হয়। বাকিগুলোতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ভোট হয়েছে। ভোট দিয়ে বাড়ি গেছেন।’
আলমগীর আরও বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর ২০ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিল; কমিশনও যত রকম ব্যবস্থা নেয়া যায় নিয়েছিল।
সহিংসতায় প্রাণহানি ‘ভয়ঙ্কর অবস্থা’ কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কোথায় হল? যেখানে ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দুইটা কেন্দ্র স্থগিত। ইভিএম ভাঙচুর না করলে সেখানেও নির্বাচন হত। ভোট নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে বন্ধ রাখা হয়েছে দুইটা।’
সকালে ভোট শুরুর পর থেকেই বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের এজেন্টদের ‘বের করে দেয়ার’ অভিযোগ করে আসছিলেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইসি সচিব বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোগ রিটার্নিং অফিসার দেখবেন। তারপরও যেসব অভিযোগ কমিশনে পাঠাবে, তা কমিশনে উপস্থাপন করব। কমিশন বললে তখন ব্যবস্থা নেব।’
ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক একটু কম ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধু চট্টগ্রামে নয়, যে কেনো বড় শহরে ভাসমান লোক থাকে, উপস্থিতি কম হয়। চট্টগ্রামে আমরা আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। তারচেয়ে একটু কমই হয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, “উন্নত বিশ্বে বেশিরভাগ দেশে ভোটের ক্ষেত্রে এমন হয়। আমেরিকার ক্ষেত্রে দেখবেন, সব দিক দিয়ে এত উন্নত তারা; কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে ভোট দিতে যায় না বেশিরভাগ মানুষ।
তো আমাদের দেশেও অনেকটা ওই রকম; উন্নত হওয়ার সাথে সাথে এ লক্ষণ দেখা দিয়েছে। মানসিকতা বদল হয়েছে।