ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হচ্ছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিন লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বুধবার রাত দেড়টা পর্যন্ত ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭১০টির ফলাফল পাওয়া গেছে। এতে নৌকা প্রতীকে রেজাউল করিম পেয়েছেন তিন লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৫ ভোট। আর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫১ হাজার ৩৩১ ভোট।
নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামে ভোটের ফল ঘোষণা করছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান।
এর আগে বুধবার সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনার মধ্য দিয়ে একটানা ভোটগ্রহণ চলে। সব কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়। বিএনপি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্রে জানা যায়, সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার নয় লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩জন এবং নারী ভোটার নয় লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন। এবারের নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ২৩২ জন প্রার্থী।
এর আগে ২০১৫ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলমকে এক লাখ ২৭ হাজার ৩২৭ ভোটে পরাজিত করে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দীন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী বারবার বিজয়ী হয়েছেন। তবে ২০১০ সালে তিনি পরাজিত হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলমের কাছে।
কে এই রেজাউল করিম চৌধুরী?
বন্দরনগরীর নতুন মেয়র হতে যাওয়া রেজাউল করিম চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৬৭ সালে কলেজ ছাত্রাবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সদস্য পদে ফরম পূরণের মাধ্যমে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৯-১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৭০-১৯৭১ সালে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছাত্রাবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১নং সেক্টরের বি এল এফ এর মাধ্যমে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও কোতোয়ালি থানা এলাকায় সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এ মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৭৩-১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭-২০০৬ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, ২০০৬-২০১৪ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে পরিচিতি রয়েছে রেজাউল করিম চৌধুরীর। বর্তমানে তিনি নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।