বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি বিনিয়োগের জন্য দেশের অবকাঠামো ও নির্মাণ খাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে জানিয়েছেন । তিনি বলেন, দেশি-বিনিয়োগ আকর্ষণ ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য মানসম্মত অবকাঠমো খাতের কোন বিকল্প নেই। আর বাংলাদেশের অবকাঠামোখাতের সার্বিক উন্নয়নে মিশরের উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহ রয়েছে। তাই এ খাতের বিকাশে মিশর ও বাংলাদেশের সরকারী-বেসরকারীখাত যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি বলেন, করোনা মহামারীতে বৈশি^ক অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে, তা মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে মিশর আগ্রহী। সেজন্য তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ল্যাটিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে পণ্য রপ্তানিতে মিশর শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউটের (ওআইআই) তথ্য মতে, সারাবিশে^ অনলাইন ভিত্তিক কর্মীর সংখ্যার হিসেবে পৃথিবীতে দ্বিতীয় অবস্থানের রয়েছে বাংলাদেশ। বিশাল এ দক্ষ মানব সম্পদকে মিশরের ই-কমার্স খাতে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান। ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ মিশরে ২৮.৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, বিপরীতে ৬১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করছে, যার মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বাংলাদেশ হতে আরো বেশি হারে সূতা, অর্গানিক কেমিক্যাল, নিটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, পাদুকা, প্লাস্টিকজাত পণ্য, ঔষধ, হোমটেক্সটাইল এবং সিরামিক প্রভৃতি পণ্য আমদানির প্রস্তাব করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আরো বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকল্পে সরকার ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করছে, যেখানে মিশরের উদ্যোক্তারা সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগ করতে পারে। তিনি ডিসিসিআইতে একটি ‘মিশর হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন, যার মাধ্যমে দু’দেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাত ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যাদি পেতে পারবেন। দুদেশের উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক উন্নয়নে ডিসিসিআই সভাপতি কায়রো চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ঢাকা চেম্বারের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়ন এবং অনলাইন ভিত্তিক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজনের প্রস্তাব করেন।
ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং মিশর দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়াম এম রাগেই উপস্থিত ছিলেন।