নতুন প্রতারণা ও দুর্ব্যবহারের খবরে সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে বৃটেন থেকে বাংলাদেশে যাওয়া প্রবাসীদের সাথে করোনা ভাইরাসের নামে । ভূয়া রোগী সাজিয়ে তথাকথিত করোনা সেন্টারে জঘন্য অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শারীরিক ও মানসিক ভাবে লাঞ্চিত করা এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে ভীতিকর সংবাদ প্রচার করে জনজীবনে আতংক সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ১৫৭ জন যাত্রী নিয়ে বিমান সিলেটে পৌছে। নিয়ম অনুযায়ী যাত্রীগন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। রোববার সকলের নমুনা সংগ্রহ করে ২৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে জানানো হয়। তাদের কারো মধ্যে ভাইরাসের কোন উপসর্গ না থাকায় তারা এটি সহজে মেনে নিতে পারেননি। তারা সকলেই বৃটেনে থেকে করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯ টেস্টের নিগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে গেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, সিলেটের কোয়ারেন্টিনে একজন স্বাস্থ্য কর্মী প্রবাসীদের তাপমাত্রা দেখার জন্য অকেজো এক হ্যাণ্ড মেশিন নিয়ে হাজির হন এবং তাপমাত্রার পরিমান বেশী দেখাতে থাকেন। তখন একজন প্রবাসী তার নতুন কেনা মেশিন ও থার্মোমিটার দিয়ে চেক করে দেখেন স্বাস্থ্য কর্মী দেখানো তাপমাত্রা সঠিক নয়। বরং আসল তাপমাত্রা অনেক কম।
যাত্রীরা আরো অভিযোগ করেছেন, হোটেলে ৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে যখন তাদের করোনা পরীক্ষা করা হয় তখন কারো শরীরে করোনার কোন লক্ষণ ছিলনা। হোটেলে বসবাসরত একই কক্ষের দুইজনকে বলা হয়েছে পজেটিভ আর দুইজনকে নেগেটিভ।
কোনে উপসর্গ না থাকায় মঙ্গলবার ফের তাদের নমুনা সংগ্রহ করে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পাঠানো হয়। রাতে ল্যাব রিপোর্টে ২৫ জনের করোনা নেগেটিভ আসে। অথচ এর আগে বেসরকারি একটি ল্যাবে পরিক্ষা করা হলে ২৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে অপপ্রচার ও হয়রানি করা হয়।
ভয়েস ফর জাস্টিস ইউকের সেক্রেটারী কে এম আবুতাহের চৌধুরী বৃটেন থেকে বাংলাদেশে প্রবাসীদের অহেতুক বিড়ম্বনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, লুটেরা মহল অর্থের জন্য এসব ন্যাক্কার কাজ করছে। তিনি প্রবাসীদের এ ধরণের হয়রানীর নিন্দার জানান।
আবুতাহের চৌধুরী বলেন, এটা আজ প্রমাণিত প্রবাসীদের পকেট খালি করার জন্য এক শ্রেণীর লুটেরা ও দুর্নীতিবাজ অহেতুক বিড়ম্বনা করছে। তার প্রমাণ হল, যে ২৮ জনকে করোনা পজিটিভ দেখিয়ে খাদিম পাড়া হাসপাতালে নিয়ে কষ্ট দেয়া হয়েছে তাদের দ্বিতীয় টেস্টে ২৫ জনের নেগেটিভ এসেছে। এখন আবার তৃতীয় টেস্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাপমাত্রা টেস্টের নামে মিথ্যাচার করা হচ্ছে ।
প্রবাসী কমিউনিটি নেতা আক্তার হোসেন কাউসার বলেছেন, বিমানের কর্মকর্তা হোটেল মালিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি ঘুষ নেয় তা অনেক পুরোনো। কিন্তু বর্তমানে এত বিপদের সময়ও হোটেল ও কোয়ারেন্টিনে ঘুষের ব্যবসা যারা করছে, এরা তো পশুর চাইতে অধম। লন্ডন প্রবাসীরা সর্বদা এদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।