চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন শুরু হয়েছে । করোনার বাধা পেরিয়ে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন বন্দরনগরীর বাসিন্দারা। বুধবার সকাল আটটা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) মাধ্যমে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এবার মেয়র পদে সাতজন এবং কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন ২২৫ জন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তা আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪ হাজারের বেশি সদস্য। সবমিলিয়ে ভোটের মধ্যে থাকবেন সাড়ে ১৯ লাখের বেশি মানুষ।

মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত রেজাউল করিম চৌধুরী। আর বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। গত বছরের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় আট দিন আগে তা স্থগিত করা হয়। এর প্রায় দশ মাস বন্দরনগরীতে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দেশের এই বাণিজ্যিক শহরে ভোটার আছেন মোট ১৯ লাখ ৩০ হাজার ৭০৬ জন। মোট ৭৩৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে এই ভোটগ্রহণ করা হবে। সে হিসেবে প্রতি কেন্দ্রে ভোটার ও বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মিলিয়ে গড়ে প্রায় ২৬০০ মানুষের উপস্থিতি ঘটবে আট ঘণ্টায়। ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৪২৯টি কেন্দ্রকে।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা এবং ভোটের দিন রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না।

এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে উৎসব-উত্তাপ থাকা সত্ত্বেও প্রার্থীদের প্রচারণার কারণে নগরবাসীকে কোনো ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। সড়ক বন্ধ করে মিছিল-মিটিংয়ে যেমন জনদুর্ভোগ হয়নি তেমনি মাইকের প্রচারণায় কান ঝালাপালাও হয়নি।

চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘নগরীর ৭৩৫ ভোটকেন্দ্রের চার হাজার ৮৮৬ বুথের জন্য একটি করে এবং আরও ৭৩৫টি ইভিএম দেয়া হয়েছে। ফলাফল ঘোষণাসহ নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য এমএ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।’

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চসিক নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে আছে ২৫ প্লাটুন (৭৫০ জন) বিজিবি, ৪৯২ জন র‌্যাব, চার হাজার ৩০৮ জন পুলিশ এবং আট হাজার ৮২০ জন আনসার সদস্য। নির্বাচনে সব বাহিনী মিলে মোট ১৪ হাজার ৩৭০ জন সদস্য নিয়োজিত আছেন। পাশাপাশি মাঠে আছে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। মোবাইল টিম ৪১০টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১৪০টি।

ভোটের দিন ৭৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া বিজিবির প্রতি প্লাটুনে একজন করে এবং র‌্যা‌বের সঙ্গে তিনজন দায়িত্ব পালন করবেন। ইভিএমের কারিগরি সহায়তায় প্রতি ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র বাহিনীর দুজন করে সদস্য নিযুক্ত থাকবেন।

নগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অস্থিরতা ও আইন-শৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031