সিআইডি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় আকাশ ইকবাল ও মায়া হাজারিকা মিতু দম্পতি নিহতের ঘটনায় চালককে গ্রেপ্তার করেছে। লাইসেন্স ছাড়াই তিনি বাসটি চালাতেন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি’র সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। তিনি জানান, সোমবার রাতে গাজীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের একটি বাসের চালক তসিকুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার শেরপুরে। উপযুক্ত লাইসেন্স ছাড়াই তিনি বাসটি চালাতেন। ঘটনার দিন কুয়াশার কারণে মোটরসাইকেলটি দেখতে পাননি বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তসিকুল। তবে এ ঘটনায় চালকের দুই সহযোগী এখনো পলাতক রয়েছে।
সিআইডি’র অতিরিক্ত এসপি মুক্তা ধর জানান, দুর্ঘটনার পরই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান চালক তসিকুল। পরে এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করা হলে থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডি। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্য, প্রথাগত ও প্রযুক্তিগত তদন্তের ভিত্তিতে অবস্থান শনাক্ত করে তসিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তসিকুল চাপা দেয়ার কথা স্বীকার করে সিআইডিকে জানিয়েছেন, মোটরসাইকেলটি হঠাৎ বাসের সামনে চলে আসে, কুয়াশার কারণে তিনি দেখতে না পারায় চাপা পড়ে যায়। তবে, বাস চালানোর জন্য তার উপযুক্ত লাইসেন্স নেই। হালকা যান চালানোর লাইসেন্স দিয়ে ১০ বছর ধরে বাস চালিয়ে আসছিলেন।
কান্না থামছে না ওই দম্পতির কন্যা আফরার: মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আকাশ ও মায়া নিহতের পর তাদের চার বছর বয়সী একমাত্র কন্যা সন্তান আফরা এখন গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর সদর থানার ধুলদি এলাকায় দাদা-দাদির কাছে রয়েছে। বাবা-মাকে কাছে না পেয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছে সে। নিহত আকাশের ফুপাতো ভাই মো. মিজানুর রহমান মিন্টু জানান, বাবা-মাকে কাছে না পেয়ে কিছু খেতে চাইছে না আফরা। কিছুতেই তার কান্না থামাতে পারছেন না দাদা জাফর ইকবালসহ অন্যরা।
গত ১৮ই জানুয়ারি সকাল সোয়া ৭টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে পদ্মা অয়েল গেইটের পাশে আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৪২৫৪) একটি বাসের চাপায় আকাশ ও মায়া দম্পতির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। প্রতিদিন সকালে দক্ষিণখানের পূর্ব মোল্লারটেকের বাসা থেকে স্ত্রী মায়াকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বের হতেন আকাশ। স্ত্রীকে অফিসে নামিয়ে দিয়ে নিজের অফিসে যেতেন তিনি। আকাশ পদ্মা সেতু প্রকল্পে এবং স্ত্রী মায়া বিমানবন্দরের হোটেল লেক ক্যাসেলে চাকরি করতেন। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করা হয়।