কক্সবাজারের দিনমজুর পিতার সন্তান আলী ৭০০ টাকা বেতনে ফুট-ফরমায়েশের কাজ করতেন। তাও মাত্র বছর দশেক আগে। এই এক দশকে তার উত্থান রূপকথা গল্পকেও হার মানিয়েছে। গৃহপরিচারক আলী এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। কি নেই তার? একাধিক আলীশান বাড়ি, ঢাকা-চট্টগ্রামে একাধিক ফ্ল্যাট, একাধিক দামী গাড়ি, শহর ও গ্রামে জমি, ইটভাটা, খামার, নামে-বেনামে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর এসব কিছুই করেছেন জালিয়াতি, প্রতারণা আর তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে।
আলীর প্রতারণার শিকার হয়েছেন কক্সবাজারের শতাধিক মানুষ। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন গৃহপরিচারকের চাকরিদাতা প্রবীণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী।
অভিযোগে তিনি দাবি করেছেন, নামের মিল থাকায় জালিয়াতি করে আলী হাতিয়ে নিয়েছেন তার প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের বিশাল মার্কেট আর আট কোটি টাকা মূল্যের বসতভিটাও কৌশলে হাতিয়ে নিতে নানা ফন্দি-ফিকির করছেন। ভুয়া বন্ধকি দলিল বানিয়ে তার মার্কেটও দখলে নেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। এমনকি প্রতারক মো. আলী তার আট কোটি টাকার বাড়ি দখলেরও চেষ্টা করেন।
উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার শহরের পূর্ব নতুন বাহারছড়া বিমানবন্দর সড়কের পাশে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা বিলাসবহুল বাড়ি, কক্সবাজার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কস্তুরাঘাটের এন্ডারসন রোডের ডুপ্লেক্স বাড়ি, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের বেপারীপাড়ার ৩৭০ এক্সেস রোডের ১০ তলা ভবন, নিজ গ্রামে পাঁচ কোটি টাকার প্রাসাদোপম বাড়ি, কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও বাইপাস সড়কে তিনটি এবং ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাট, কক্সবাজার পৌরসভা ও তার পিএম খালী ইউনিয়নে নামে-বেনামে ৩০ একর, চট্টগ্রামে ১০ একর জমি, কক্সবাজার সদরের ঈদগাহে মেসার্স এসএমএ ব্রিক ফিল্ড, কক্সবাজার সদরের গোলারপাড়া গ্রামে নিজ নামে আলী ডেইরি অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্ম, মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ নামে-বেনামে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ইতিমধ্যে তার প্রতারণা নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর গণমাধ্যমে লিখিত বিবৃতি দেন মো. আলী । বিবৃতিতে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোন সামঞ্জস্য নেই। তিনি বাংলাদেশ সরকারের আয়কর প্রদানকারী একজন সৎ ও পরিচ্ছন্ন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর পরিবার তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রে নেমেছেন।