সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বিএনপি’র কর্মসূচি লোক দেখানো। সরকার সীমান্ত এলাকায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় অত্যন্ত আন্তরিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন। গতকাল সচিবালয়ে তার দপ্তরে সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও সিলেট-হবিগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস সার্ভিস উদ্বোধন শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। বিএনপি’র গণতন্ত্র হচ্ছে তাদেরকে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গ্যারান্টি দেয়া উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের গণতন্ত্র হচ্ছে হাওয়া ভবনের লুটেরা সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটের দিন সরে যাওয়াই বিএনপি’র গণতন্ত্র। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিতে গণতন্ত্রের চর্চা নেই- একথা বলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নাকি কষ্ট পেয়েছেন। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কাউন্সিল কত বছর আগে হয়েছিল, হয়তো ফখরুল সাহেব তা ভুলেই গেছেন। আসলে বিএনপি’র সমস্যা হলো তারা এখন বহুধা বিভক্ত নেতৃত্বে, তৃণমূলে নয়।
গণতন্ত্র একটি বিকাশমান প্রক্রিয়া, হঠাৎ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায় না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্র এক চাকার সাইকেল নয়, গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন সকল পক্ষের সদিচ্ছা। যা বিএনপিতে নেই। দেশে গণতন্ত্র নেই বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাহলে আপনারা প্রতিনিয়ত সরকারের সমালোচনা করছেন কীভাবে? গণতন্ত্র আছে বলেই তো আপনারা সমালোচনা করে যাচ্ছেন। গঙ্গার পানি বণ্টন প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন গঙ্গার পানি বণ্টনের কথা ভুলে গেলেও আওয়ামী লীগ সরকার ভুলে যায়নি। তিস্তার পানি বণ্টনও সমাধান হবে অচিরেই, এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর আগে ওবায়দুল কাদের সচিবালয়স্থ কার্যালয় হতে ভিডিও কনফারেন্সে সিলেট-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল ও সিলেট-হবিগঞ্জ রুটে বিআরটিসি’র বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প আগামী মাসে একনেকে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, বিআরটিসি’কে গণমানুষের আস্থার বাহনে রূপান্তর করতে শেখ হাসিনা সরকার সমপ্রতি বহরে সহস্রাধিক বাস ও ট্রাক সংযোজন করেছে। এখন প্রয়োজন বিআরটিসি’র নেটওয়ার্ক সমপ্রসারণ এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা দক্ষতা উন্নয়ন। সেবাখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে অনিয়ম কমানো সম্ভব উল্লেখ করে মন্ত্রী বিআরটিসি’র ট্রিপ ব্যবস্থাপনায় জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি মনিটরিং জোরদার ও রাজস্ব আয় বাড়াতে নিজস্ব অপারেশন সফটওয়্যার ব্যবহারের নির্দেশ দেন। সড়ক-মহাসড়কে ঘন কুয়াশা থাকায় সাবধানে গাড়ি চালাতে গাড়িচালকদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিআরটিসি বহরে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু যে হারে আয় বাড়ার কথা সে হারে বাড়ছে না। মালিক- শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘যত সিট তত আসন’ নীতি প্রতিপালনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতিটি গাড়িতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন না করলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভিডিও কনফারেন্সে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান মো. এহছানে এলাহী, সিলেটের রেঞ্জ ডিআইজি, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার সংযুক্ত ছিলেন। এর আগে সচিবালয়ে সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।