আজ থেকে সিলেট বিভাগে তিনদিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ধর্মঘট সফল করতে সকাল থেকেই পরিবহন শ্রমিকরা রাজপথে অবস্থান নিয়েছেন পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে । সকালে তারা দক্ষিণ সুরমার বাইপাস এলাকায় অবরোধ দিলে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়।
সিলেটে ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দিসহ কয়েকটি কোয়ারিতে শ্রমিক মৃত্যুর কারণে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়ায় পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। করোনাকালে পাথর সংশ্লিষ্ট প্রায় ১৫ লাখ শ্রমিকের দুর্ভোগ লাঘবে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলো ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’। এই পরিষদের অন্যতম নিয়ন্ত্রক হচ্ছে সিলেটের ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতারা। মুলত: তাদের নেতৃত্বেই বর্তমানে কোয়ারি খুলে দেয়ার আন্দোলন চলছে।
গত বৃহস্পতিবার সিলেটের একটি হোটেলে যৌথসভা করে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলো।
এদিকে- ধর্মঘট শুরু আগে গতকাল বিকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার ফরিদউদ্দিন ধর্মঘট আহ্বানকারী মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের আবেদন জানালেও পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা পূর্বের ঘোষিত কর্মসূচিতে অনড় থাকেন।
আজ সকাল ৬ টার থেকে ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘট শুরু হলে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দুরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি কিংবা প্রবেশও করেনি। সিলেটের আন্ত:জেলা সড়কেও কোনো যানবাহন চলছে না। এ কারণে যাত্রীদের মধ্যে চরম ভোগান্তি দেখা দেয়। অনেকেই পায়ে হেটে, রিকশা কিংবা রাইড শেয়ারের মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে পৌঁছান।
ধর্মঘট শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের একটি দল নগরীর বাইপাস এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় জরুরি কাজে চলাচলকারী যানবাহনকে সড়কে চলতে বাধা প্রদান করে। ফলে বাইপাস এলাকায় কয়েকটি যানবাহন আটকা পড়লে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আক্তার হোসেন সেখানে আসেন। তিনি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলার সুযোগ করে দেন।
পুলিশ জানিয়েছে- রাস্তায় যানবাহন চলাচলে জোরপূর্বক বাধা প্রদান করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তিন দিনের ধর্মঘটের প্রথম দিনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সিলেট। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে শ’শ’ পণ্যবাহী যানবাহনও সিলেটে এসে প্রবেশ করতে পারছে না।