যুবদলের ইউনিয়ন কর্মী সম্মেলনকে ঘিরে পুলিশের সাথে যুবদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের ইটনায় । এতে দুই এএসআইসহ পুলিশের চার সদস্য এবং যুবদলের আট নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের রায়টুটী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, পুলিশ সমাবেশের খোঁজ নিতে গেলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে যুবদল নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা কোন কারণ ছাড়াই একযোগে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে পাশের একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও পুলিশের ওপর চড়াও হয় দলটির নেতাকর্মীরা। এতে বাদলা তদন্ত কেন্দ্রের দুই এএসআই তৌহিদ ও শাহীন মাতুব্বরসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন। অন্যদিকে যুবদল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পুলিশ কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তৎক্ষণাৎ সম্মেলন বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
এ নিয়ে যুবদল নেতাকর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়ালে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে। এতে সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়। এসময় পুলিশের লাঠিপেটায় যুবদলের অন্তত আট নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. আবেদ খান অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নে কমিটি গঠনের জন্য রায়টুটী গ্রামে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বাবু মিল্কীর বাড়িতে যুবদল আয়োজিত সম্মেলন চলাকালে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ এসে অতর্কিত লাঠিপেটা শুরু করে।
আবেদ খান জানান, উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক কাযর্ক্রমের অংশ হিসেবে রায়টুটী ইউনিয়নের কমিটি গঠনের জন্য এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। বেলা ১১টা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সংগঠনটির সম্মেলন চলছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে নেতাকর্মীর সংখ্যাও বাড়ছিল। দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ সদস্যরা এসে সম্মেলনে বন্ধ করতে বলেন। এতে সম্মেলনস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের সাথে যুবদলের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সম্মেলনে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ চড়াও হয়ে অতর্কিত লাঠিপেটা শুরু করে। এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে। পুলিশের লাঠিপেটায় এসময় যুবদলের অন্তত আট নেতা-কর্মী আহত হন। এ পরিস্থিতিতে তাদের সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়। যুবদলের আহত নেতাকর্মীদের সাধারণ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. আবেদ খান জানিয়েছেন।
এদিকে ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান বিপিএম জানান, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রায়টুটী গ্রামে সমাবেশ আয়োজনের খবর পেয়ে বাদলা তদন্ত কেন্দ্র থেকে চার পুলিশ সদস্য সমাবেশস্থলে যান। সেখানে গিয়ে এখানে কী হচ্ছে জানতে চাইতেই বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাশের ফালান মিল্কীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও তাদের মারধর করা হয়। এ সময় বিএনপি-যুবদল নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ওই বাড়িটিও ভাঙচুর করে। তাদের এই সংঘবদ্ধ হামলায় এএসআই তৌহিদ ও এএসআই শাহীন মাতুব্বর এবং দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই বাড়িতে থাকা কয়েকজনও আহত হয়। খবর পেয়ে ইটনা থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।