ডাবরসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় কোম্পানির বিরুদ্ধে চিনি মিশিয়ে মধু বিক্রি করার অভিযোগ ওঠেছে । জনপ্রিয় কোম্পানি ডাবর, পতঞ্জলি, ঝাণ্ডুর মধুতে ভেজাল খুঁজে পেয়েছেন দেশটির সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্টের (সিএসই) বিজ্ঞানীরা । ভেজাল চিহ্নিত করার পরীক্ষায় উৎরাতে ব্যর্থ হয়েছে সব ক’টি। দেশটির শীর্ষস্থানীয় অধিকাংশ কোম্পানিই চিনি মিশিয়ে মধু বিক্রি করে বলে বিজ্ঞানীদের দাবি। যদিও কোম্পানিগুলো এ অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, এ রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সম্প্রতি ভারতীয় শীর্ষস্থানীয় অনেক গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।
সিএসই’র মহাপরিচালক সুনীতা নারায়ণ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতির মধ্যে উত্তর ভারতের মৌমাছি পালনকারীরা অভিযোগ করেন, মধু বিক্রি বাড়লেও তাদের মুনাফা কমেছে। পরে ১৩টি ছোট-বড় সংস্থার মধু নিয়ে গবেষণা চালান তারা।
এতে দেখা যায়, ভারতীয় বাজারের সিংহভাগ দখল করে রাখা এসব মধু কোম্পানি তাদের মধুতে চিনির সিরাপ রস মিশিয়ে বিক্রি করছেন। তবে ডাবর, পতঞ্জলি ও ঝাণ্ডু কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের মধুতে কোনো ভেজাল নেই, দেশের বিভিন্ন অংশের প্রাকৃতিক উৎস থেকে এসব মধু সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া প্যাকেটজাত করার সময় এসব মধুতে কোনো চিনি মেশানো হয় না। মধুগুলো ফুড সেফটি এন্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার নিয়মকানুন মেনেই বাজারজাত করা হয় বলে দাবি তাদের।
সিএসই জানায়, এ ধরনের পরীক্ষাগুলো পাস কাটিয়েই মধুতে ভেজাল মিশিয়ে বিক্রি করছে কোম্পানিগুলো। আগে মধুর মিষ্টতা বাড়াতে ভুট্টা, আখ, চাল ও বিটের চিনি মেশানোয় পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে যেত। তবে এখন মেশানো হচ্ছে চাইনিজ সুগার। এটি শুধু নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্সেই ধরা পড়তে পারে।
এ বিষয়ে ডাবরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এ রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং আমাদের ব্র্যান্ডের মানহানির উদ্দেশ্যে এটা করা হয়েছে। আমরা গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতে চাই, ডাবর মধু ১০০ ভাগ খাঁটি এবং সম্পূর্ণ দেশীয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ মধু সংগ্রহ করে তা বাজারজাত করা হয় এবং তবে সুগার বা এ জাতীয় কিছু মেশানো হয় না। পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আচার্য বালাকৃষ্ণাও এটি ভারতের প্রাকৃতিক মধুর সুনাম হানির চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছেন।
সম্প্রতি সিএসই এক গবেষণা নিবন্ধে দাবি করে, ভারতের শীর্ষস্থানী মধু ব্র্যান্ডগুলোতে চিনির রস পাওয়া গেছে। ১৩টি বড় ও ছোট কোম্পানির মধু পরীক্ষা করে দেখা যায়, এর ৭৭ শতাংশের চিনির রস মেশানো হয়েছে। ২২টি নমুনা পরীক্ষায় মাত্র পাঁচটি উত্তীর্ণ হতে পেরেছে।