চট্টগ্রাম : ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রতিদিন লোকসান দুই বছরের গ্যারান্টি থাকা সত্ত্বেও চালুর এক মাসের মধ্যেই হোঁচট খেল সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় গত শুক্রবার থেকে চলছে না ট্রেনের একটি এসি কোচ। কোচটি বন্ধ থাকায় রেলওয়েকে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে লাল সবুজের নতুন এই ট্রেন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছিলেন গত ২৬ জুন। যাত্রী নিয়ে ট্রেনটির প্রথম যাত্রা হয় ২৭ জুন। ১৬টি কোচ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ট্রেনটি এখন একটি এসি কোচ কম নিয়েই চলাচল করছে।
রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে সোনার বাংলা ট্রেনটি ২০ মিনিট বিলম্বে চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে ১৬টি কোচ নিয়ে সকাল ৭টায় ছেড়ে আসার পর দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রামে পৌঁছলেও বিকাল ৫টায় ছাড়ার আগ মুহূর্তে ১৩০১ নম্বর এসি কোচটি অকার্যকর হয়ে যায়।
এতে এই কোচটিকে বাদ দিয়ে যাত্রীদের অন্য কোচে সমন্বয় করে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়।
সূত্র জানায়, সোনার বাংলায় ১৬টি কোচের মধ্যে নন এসি কোচ রয়েছে ৭টি, এসি চেয়ার কোচ ৪টি, এসি কেবিন ২টি, দুটি খাবার গাড়ি ও একটি পাওয়ার কার। ৫৫ সিটের এসব এসি কোচের একেকটির দাম পড়েছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। নন এসি কোচের দাম ২ কোটি ৯৬ লাখ ও পাওয়ার কারের দাম পড়েছে ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এতো দামে কেনা এসব কোচ নির্বিঘেœ টানা দুই বছর সার্ভিস দেয়ার কথা।
কিন্তু চালুর মাত্র এক মাসের মাথায় তা বিকল হয়ে যায়। বিকল কোচটি এখনো মেরামতও করা সম্ভব হয়নি। কোচটি মেরামতের জন্য পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় পাঠাতে হবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানার তত্ত্বাবধায়ক মিজানুর রহমান বলেন, শুনেছি সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের একটি এসি কোচ বিকল হয়েছে। মেরামতের জন্য কোচটি আমাদের কারখানায় পাঠানোর কথা রয়েছে। কিন্তু তা এখনো আসেনি। ইন্দোনেশিয়ার প্রকৌশলীরা আমাদের কারখানায় রয়েছেন, তারা বিষয়টি দেখবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন করে আসা আরো ২২টি কোচ অ্যাসেম্বলিং এর কাজ চলছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১৫০টি কোচের মধ্যে এ পর্যন্ত তিন দফায় ৫৯টি কোচ পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
কারখানার সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ইনচার্জ) আশিষ চক্রবর্তী জানান, গত মে মাসে ইন্দোনেশিয়া থেকে আনার পর সোনার বাংলার বিকল হওয়া কোচটিতে যান্ত্রিক কোনো ত্রুটি ছিল না। তবে এসিতে সমস্যা ছিল। তাই এটিকে ইলেকট্রিক বিভাগে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু এখন যান্ত্রিকভাবে বিকল হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে সোনার বাংলা।
রেলওয়ের এই কর্মকর্তা জানান, কোচটি বিকল হয়ে যাওয়ার কারনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দৈনিক এক লাখ ১০ হাজার টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া যাত্রীদের দুর্ভোগও বেড়েছে।