চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের কোন অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও জাল কাগজপত্র দাখিল করে প্রতারণা করে ৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প নতুন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবন নির্মাণের কাজ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আলোচিত যুবলীগ নেতা জিকে শামিমসহ দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) ।
রোববার (২২ নভেম্বর) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম।
মামলায় জিকে শামীমের পাশাপাশি আসামি করা হয় অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল করিম চৌধুরীকে।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন সাংবাদিকদের জানান, জাল কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে প্রতারণা করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবন নির্মাণের ৭৫ কোটি টাকার কাজ ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জিকে শামিম ও মো. ফজলুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের জন্য ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকেবিএলকে তাদের দাখিল করা একক মালিকানাধীন ফার্ম হিসেবে ৭৫ কোটি এক লাখ ২৯৫ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
দুই বছরের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার শর্তে ওই বছরের ১৪ নভেম্বর তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তি করার সময় দি বিল্ডার্ ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকেবিএল তাদের দাখিল করা কাগজের সঙ্গে আগের পাঁচবছরে কমপক্ষে একটি ৩৫ কোটি টাকার বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ সন্তোষজনকভাবে সমাপ্তির সনদপত্র ও তার আগের পাঁচবছরে গড়ে কমপক্ষে ৪১ কোটি টাকার টার্নওভার এবং ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকার লিকুইড অ্যাসেট সংক্রান্ত কাগজপত্রও জমা দেয় যার সবই ছিলো জাল।
তাছাড়া মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম ও মো. ফজলুল করিম চৌধুরী প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে কোন চুক্তির কাগজপত্র ছাড়াই কোম্পানির প্রকৃত নিবন্ধিত নামের সাথে একক মালিকানাধীন ফার্মের নাম সংযুক্ত করে নিবন্ধনের সনদ জমা দেন।
এখানেও প্রকৃত শেয়ার সংখ্যার চেয়ে বেশি শেয়ার দেখানো হয়। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির অযোগ্যতা ও অদক্ষতার সুযোগে ব্যবসায়ী হিসেবে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে অতি সুক্ষ্ম তথ্যগত জালিয়াতির মাধ্যমে ক্রয় প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব বিস্তার করে ওই কার্যাদেশ হাসিল করে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪০৯/১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।