সবজির দাম প্রতিদিনই কমছে । গত দু’দিনে কোনো কোনো সবজি কেজিতে ২০-২৫ টাকা কমেছে। বিক্রেতারা বলেছেন জোগান বাড়ার সাথে সাথে কমে আসছে সব সবজির দাম। এ দিকে, সবজির দাম কমে আসায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরছে। বাজারে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজও আসা শুরু করেছে। সবজির সাথে সাথে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামেও প্রভাব পড়েছে।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই বাজারে শীতের সবজির জোগান ব্যাপক। তবে সবজির জোগান থাকলেও দু’দিন আগেও দাম কিন্তু নাগালের বাইরেই ছিল। দু’দিনে কোনো কোনো সবজির দাম ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বেগুন দু’দিন আগেও ছিল ৬০ টাকা। গতকাল সেই বেগুন বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি। কমেছে করলার দাম। বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। দু’দিন আগেও যে শিম বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়, সেই শিম গতকাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। টমেটোতেও ২০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে এক শ’ টাকা কেজি। বাজারে কাঁচা টমেটোও এসেছে। মানভেদে কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। শালগম একেবারে নতুন বাজারে এসেছে। যে কারণে এর মূল্যটা এখনো একটু বেশি। বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। মুলা বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়।
শীতের সবজির দাম কমলেও গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম কিন্তু বেশি কমেনি। যেমনÑ কচুর লতি, বরবটি, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ঢেঁরস, পটেটো এখনো ৫০-৬০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। দু’দিন আগেও যে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। গতকাল তা ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কমেছে শাকের দামও। দু’দিন আগেও যে শাক বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকা আঁটি। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৮-১০ টাকায়।
রাজধানীর মানিকনগর এলাকার সবজি বিক্রেতা মামুন বলেন, বাজারে সবজি আসছে ব্যাপক। জোগান বাড়ার সাথে সাথে দাম হঠাৎ করেই কমে গেছে। বাজারে সবজির চড়া মূল্য দেখে অনেকেই এবার আগাম সবজি চাষ করেছেন। ওই সবজিগুলোও এখন প্রচুর পরিমাণে আসছে। বাজারে বর্তমানে সবজির কোনো ঘাটতি নেই। অনেকের সবজি পচেও যাচ্ছে। যে কারণে পাইকারি বাজারেই দাম কম। আর পাইকারি কমে কিনতে পারায় খুচরা বিক্রেতারাও কম মূল্যে সবজি ভোক্তাদেরকে দিতে পারছেন।
পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ প্রচুর পরিমাণে আসতে শুরু করেছে। দাম রাখা হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। এতে পুরনো পেঁয়াজের দামও কমে এসেছে। পুরনো পেঁয়াজ এখন মানভেদে ৫০-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর দাম আগের মতোই আছে। ৪৫ টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে আলুর কেজি। হাতে গোনা দু-একটি দোকানে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। কোনো কোনো এলাকাতে এখন আলু পাওয়াই যাচ্ছে না বলে একাধিক ভোক্তা জানিয়েছেন। মুগদা থেকে জাকির হোসেন জানিয়েছেন, এলাকার দোকানগুলোতে এখন আর আলু বিক্রি হয় না। আলু কিনতে হলে মূল বাজারে যেতে হয়।
এ দিকে, সবজির সাথে সাথে ডিমের দামও কমেছে। প্রতি ডজন ডিম এখন ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেছে মাছের দামও। মানিকনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা সুভাষ জানান, শুকনো মৌসুমের শুরুতে খাল-বিল-হাওরের পানি কমতে শুরু করেছে। যে কারণে দেশীয় মাছ পুঁটি, টেংরা, শিং, কৈ, শোল, টাকি, বোয়াল-ইত্যাদির জোগান এখন বেশি। যে কারণে মাছের দাম তুলনামূলক অনেক কম। কাইউম নামে এক ক্রেতা গতকাল বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমায় মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে।