বিনাপুঁজিতে লাভজনক পেশা। মাছ কাটা। হাতের জারিজুরি। ‘ফেলো কড়ি, কাটো মাছ’ । একেবারে নগদ ব্যবসা। বাকি বাট্টা নেই। এ পেশার সামাজিক মর্যাদা থাক বা না থাক, রয়েছে কড়কড়ে টাকা। মৌসুমী ব্যবসা করতে এসে অনেকই বেছে নিচ্ছে এ ব্যবসাকে স্থায়ী ব্যবসা হিসেবে। তাদের কাছে এখন মাছ কাটা একটি লাভজনক পেশা।
এই পেশায় অনেক পরিবার স্বাবলম্বী। প্রত্যেক বাজারে এই পেশার লোক রয়েছে। বাজার খোলা থেকে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত চলে মাছ কাটা।
মাছের প্রকারভেদে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা নেয়া হয়। প্রথমে এর সুবিধা হোটেল ব্যবসায়ী ও ব্যাচেলররা ভোগ করলেও সময় বাঁচানো এবং কুটাবাছা থেকে গৃহীনিকে বিরত রাখতে অনেকে বাজার থেকে মাছ কেটে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একজন মাছ কাটাওয়ালা গড়ে ৫০ থেকে ৬০ কেজিরও বেশি মাছ কাটে। নগরীর কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়,বাজারের একপাশে কিছু লোক গাছের তক্তার উপর দা দিয়ে মাছ কাটছেন।
নিমিষেই মাছ টুকরো টুকরো করে ফেলছেন। ক্রেতার ভিড়ও দেখার মতো। তবে অধিকাংশ মাছ কাটার সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজন উত্তরাধিকার সূত্রে মাছ কাটা পেশায় আসেননি।
তারা নিজেরা মাছ কাটা শিখে এ পেশায় এসেছেন বলে জানা যায়। যারা মাছ কাটেন তারা বলেন, মাছ কাটা হয় কেজি হিসেবে। ছোট মাছ বা এককেজি ওজনের একটি মাছ পিছ করার জন্য ২০ টাকা নেওয়া হয়।
তিন কেজি ওজন থেকে শুরু করে বড় মাছ কাটার জন্য নেওয়া হয় ৩০ টাকা। বাজারে দুটো দোকানে দৈনিক প্রায় ১০০ কেজি মাছ কাটা হয়। তবে সবসময় বাজার একিই থাকেনা। মাছ কাটার পেশায় থাকা ব্যক্তি মো: আবুল হাশেম বলেন, সকাল আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বাজার চলে।
তাই বাজারের সময়টুকু মাছ কাটা চলতে থাকে। দৈনিক প্রায় ছোট-বড় কেজি হিসেবে তিনহাজার টাকার মাছ কাটা হয় ।
মাসে হিসেব করলে প্রায় নব্বই হাজার টাকার মাছ কাটা হয়।
আমরা যারা এ পেশায় আছি তাদের মজুরি দৈনিক ২৫০ টাকা। তবে , যারা নতুন এসেছে তাদের বেতন ১৫০ টাকা। যদি ক্রেতারা খুশি হয়ে ৫/১০ টাকা বাড়িয়ে দেয় তাহলে এটি আমাদের বাড়তি আয় হয়।
মাছ কেটে টাকাটা আমাদের দোকানের মালিককে দিয়ে দিতে হয়। মালিক সম্পূর্ণ টাকাটি বুঝে নেন। মাছ কাটার পেশায় থাকা আরেক ব্যক্তি মো: জাকের বলেন, এ কাজ খুবই কষ্টের।
মাছ কাটতে কাটতে হাত ধরে যায়। তবে যতক্ষণ শরীরে বল থাকে ততক্ষণি মাছ কাটতে থাকি। আমরা এখানে দৈনিক মজুরি হিসেবে কাজ করি।
আমাদের এখানে মাছ কাটার জন্য দুটো দোকান রয়েছে। দুটো দোকানে মাছ কাটার লোক প্রায় ১৫ জন। মাছ কাটার সরঞ্জাম হিসেব গাছের তক্তা এবং দা এ দুটি দিয়ে ব্যবহার করা হয়।