বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিইসি একটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন । বলেছেন, আমেরিকার নির্বাচনের সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচনের তুলনা করা হাস্যকর। ফখরুল বলেন, সিইসি বলেছেন ‘যুক্তরাষ্ট্র ৫ দিনে ফল দিতে পারে না, আমরা ৫ মিনিটে পারি।’ আপনারা পারবেন, কারণ ফলাফল আগেই নির্ধারণ করা থাকে।’

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপ-নির্বাচনের ফলাফল বাতিল এবং পুনঃনির্বাচনের দাবিতে এ প্রতিবাদ সভা আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।

ফখরুল বলেন, এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন, তাদের লাজ-লজ্জা-শরম-হায়া বলতে কিছু নেই। তাদের লজ্জা শরম যদি থাকত, তাহলে অনেক আগেই পদত্যাগ করে চলে যেত। তারা আজকে সম্পূর্ণভাবে এই আওয়ামী লীগ সরকারের বশংবদে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন ব্যাবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু নির্বাচন ব্যাবস্থা নয়, তারা পুরো গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের বশংবদ, অযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

সেই কারণেই ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯শে তারিখে হয়েছে এবং রাতের অন্ধকারে জনগণের সমস্ত অধিকার তারা লুট করে নিয়ে গেছে। পরবর্তীকালে যতগুলো নির্বাচন এই সরকারের অধীনে ও নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় হচ্ছে, প্রত্যেকটি নির্বাচনে তারা (নির্বাচন কমিশন) তাদের (সরকার) পক্ষে লুট করে নিয়ে যায়। এর ফলে এই নির্বাচন কমিশনের ওপর থেকে ধীরে ধীরে জনগণের আস্থা শূন্যের কোটায় চলে আসছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচনে এত সন্ত্রাস, এত কারচুপি, এত ভয়¬ভীতি প্রদর্শন করার পরও ১৪ পার্সেন্টের বেশি ভোট নির্বাচন কমিশন দেখাতে পারেনি। অথচ এই নির্বাচন কমিশনের কী অদ্ভূত কথা! চিফ ইলেকশন কমিশনার বলেছেন যে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আমেরিকান নির্বাচন কমিশনের চেয়েও উন্নত। তারা পাঁচ দিনেও ফলাফল ঘোষণা করতে পারে না, সেখানে আমরা পাঁচ মিনিটেই পারি।

সিইসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এটা পারবেন এই জন্য যে, আপনাদের ফলাফল আগেই তৈরি করা থাকে। সেটাই আপনারা ঘোষণা করে দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে গত পরশু ৯ টা বাস পুড়িয়ে দিল। তীব্র ভাষায় এই কাজের নিন্দা করেছি। আমরা ন্যাক্কারজনক বলেছি এবং আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বিএনপি কোনো সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই এখন পর্যন্ত বিএনপি প্রত্যেকটা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। অন্য কোনো উপায়ে সরকার পরিবর্তনের কথা চিন্তাও করি না, ভাবিও না।

গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব। পাশাপাশি ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ উপ-নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি হাবীব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহীন, ঢাকা মহানগর (উত্তর) যুবদলের সভাপতি ও ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031