বাংলাদেশি নাগরিকদের পর্যটন ভিসায় বিদেশ গিয়ে অনিয়মিত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন ফ্রি ভিসা বলতে কিছু নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম । বিষয়টির খারাপ দিক তুলে ধরে তিনি বলেছেন, পর্যটন ভিসায় বিদেশ গিয়ে অনিয়মিত হওয়ারা অন্য শ্রমিকদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেন। এটা কেউ করবেন না।
রবিবার বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে শ্রম উইংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুই সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, কোনো কোনো শ্রমিক ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশে গিয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। এতে তারা বাংলাদেশি অন্যান্য শ্রমিকদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেন। মাঝে মাঝে দূতাবাসকেন্দ্রিক কিছু চক্র গড়ে ওঠে। এদের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছরে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছে।
পর্যটন ভিসায় বিদেশ গিয়ে অনিয়মিতদের দেশে ফেরার পর কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এই ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার বলেন, ‘স্ব স্ব দেশ মামলা করে সেদেশের আইন অনুযায়ী দেশে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশে ফিরে আসার পর তারা কারাগারে অন্তরীণ। এ ধরনের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। তবে আমাদের দেশের নাগরিকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।।’
কেউ যেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা না বাড়ায় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান শাহরিয়ার আলম।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মিশনে সেবাপ্রত্যাশী প্রবাসী বাংলাদেশিদের কেউ যেন সেবা না পেয়ে ফেরত না যান সে বিষয়ে মিশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রতিমন্ত্রী। একইসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী প্রবাসীদের উন্নত মানের সেবা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দক্ষতার সাথে শ্রমবাজার আরো সম্প্রসারণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কাজ করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রত্যেকটি দেশের সরকার কাজ করবে এবং এক্ষেত্রে প্রথম সুযোগ যেন বাংলাদেশ সরকার নিতে পারে সেই লক্ষ্যে দূতাবাসগুলোকে কাজ করতে হবে।’
প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল শক্তিগুলোর একটি উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘প্রবাসীরা বিদেশে অনেক কষ্ট করেন। বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তারা যেন ভালো আচরণ পান।’
করোনা মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো এবং সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে। গত কয়েক মাসে করোনা পরিস্থিতিতেও প্রবাসী আয় বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে শ্রমবাজার ঝুঁকিতে থাকলেও বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো করছে।’
সামনের দিনগুলিতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় শাহরিয়ার আলম করোনায় চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরত আসাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় যে তহবিল গঠন করেছে তা তুলে ধরেন। ফেরত আসাদের সরকার ঋণ দিচ্ছে এবং তাদেরকে নতুন কর্মে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।