মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মহাকাশে দুর্লভ গ্রহের সন্ধান পেলো। সম্প্রতি প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে, এই বিশেষ গ্রহাণুর নাম দেওয়া হয়েছে ’16 Psyche’। এটি পৃথিবী থেকে ৩৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এটির আকার ২২৬ কিলোমিটারের মতো। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার এলাকা যতটা, ততটা বড় এই গ্রহাণুটি। কিন্তু এই গ্রহাণুর বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এর আকার নয়, বরং এটি যা দিয়ে তৈরি, সেই ধাতব উপাদানগুলো। বেশিরভাগ গ্রহাণু যেমন পাথর কিম্বা বরফের দ্বারা তৈরি হয়, এটি তেমনভাবে তৈরি নয়। এটি তৈরি হয়েছে বিশেষ কয়েকটি ধাতব পদার্থ দিয়ে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সাধারণত দেখা যায়, কোনও একটি গ্রহাণুতে অন্য অনেক পদার্থের মধ্যে বহুমূল্য ধাতব বস্তু লুকিয়ে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে ঘটনাটি একেবারে আলাদা। এই গ্রহাণুর ক্ষেত্রে পুরোটাই তৈরি ধাতব বস্তু দিয়ে। এতে রয়েছে নিকেল ও লোহা। আর সেই কারণেই এখানে জমা ধাতব বস্তুর দাম হতে পারে প্রায় ১০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার।
সারা পৃথিবীর অর্থনৈতির থেকে যা ১০ হাজার গুণ বেশি। হাবল টেলিস্কোপের স্পেস টেলিস্কোপ ইমেজিং স্পেক্টোগ্রাফ–এর সাহায্যে ২০১৭ সালে আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি ব্যবহার করে এই গ্রহাণুর উপাদান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। আশ্চর্যভাবে দেখা যায়, এই গ্রহাণুর পৃষ্ঠটি পুরোটাই লোহার তৈরি। মনে করা হচ্ছে, কোনও মত গ্রহের একেবারে ভিতরের অংশ এটি। একাধিক মহাজাগতিক সংঘর্ষের ফলে এটির চেহারা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকগুলো মহাজাগতিক সংঘর্ষ একে আকারে ছোট করে দিয়েছে।
ইতিমধ্যে নাসা এই রহস্য ভেদ করার কাজ শুরু করে দিয়েছে। ২০২২ সালে নাসার যান পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশে। সেটি আসলে সাইকি গ্রহাণুর তত্ত্ব তালাশ করবে। স্পেস এক্স ফ্যালকম হেভি রকেটের মাধ্যমে এটিকে মহাকাশে পৌঁছে দেওয়া হবে মহাকাশে। আশা করা যায় ২০২৬ সালের মধ্যে এই গ্রহাণুতে পৌঁছে যাবে নাসার মহাকাশ যান।