নিউ নরমাল জীবনযাত্রায় কানেক্টিভিটি এবং ইন্টারনেট আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উদ্ভাবনের শুরুর পর থেকেই ইন্টারনেট মানুষের জন্য বিভিন্ন বিষয় সম্ভব করে চলেছে। কিন্তু ইন্টারনেট যখন অভূতপূর্ব গতিতে অপার সম্ভাবনার সুযোগ তৈরি করেছে, এর পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে নেতিবাচক ঘটনাও বাড়ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে নীতিমালা লঙ্ঘন, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বুলি করা, অনুভূতিতে আঘাত করা ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
বাংলাদেশের মানুষের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে গ্রামীণফোন বিশ্বাস করে, অনলাইনে দায়িত্বশীল আচরণ আমাদের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নিরাপদ করে তুলতে সহায়তা করতে পারে। এ নিয়ে সচেতনতা তৈরির ধারাবাহিকতায় গ্রামীণফোন পুনরায় অনলাইন সচেতনতা বিষয়ক উদ্যোগ ‘ইন্টারনেটের দুনিয়ায় জানতে হবে কোথায় আপনার থামতে হবে’ শুরু করেছে।
এ উদ্যোগের লক্ষ্য সাধারণভাবে যেসব বিষয় আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, ইন্টারনেটের সেসব সম্ভাবনা ও সমস্যা তুলে ধরা। প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক মাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করবে।
এ উদ্যোগটিতে আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে বিরাজমান সাইবার অপরাধের পাঁচটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এগুলো হলো- ভুয়া প্রোফাইল, গুজব, ব্যক্তিগত তথ্য, অনলাইন বুলিং এবং অনলাইনে হয়রানি। মানুষের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ বর্তমানে ইন্টারনেট দুনিয়ায় কেমন করে ভাইরাস ও এর ভ্যাকসিন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তার চিত্রটিই এ উদ্যোগের মাধ্যম তুলে ধরা হয়েছে।
এ উদ্যোগে ডিজিটাল দুনিয়ায় ও বাস্তব দুনিয়ায় মানুষের আচরণগত পার্থক্যের উপেক্ষিত বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে দেখানো হয়েছে যে মানুষ অনলাইনে অনেক তথ্য সাধারণভাবেই শেয়ার করে, অথচ বাস্তব ক্ষেত্রে যেটা তারা কখনওই করে না। এ উদ্যোগে বাস্তব দুনিয়ায় কিছু মানুষ যে কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকে সে কাজগুলোই কেন তারা ডিজিটাল দুনিয়ায় করে থাকে এ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এছাড়াও এ উদ্যোগে সাইবার বুলিং ও অনলাইন হয়রানির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো চলমান বৈশ্বিক মহামারির সময় আরো বেড়ে গেছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছে, তারা সপ্তাহে অন্তত একবার সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয় এবং মেয়েরা ছেলদের তুলনায় তিনগুণ বেশি বুলিংয়ের শিকার হয়।
এ নিয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব বলেন, ‘ইন্টারনেট মানুষকে বিনোদন, ডাটা ব্যবহারের সুবিধা, বাক স্বাধীনতা, বিপুলসংখ্যক ভার্চুয়াল অডিয়েন্সের জন্য তথ্যভাণ্ডার এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজের জন্য তথ্য সরবরাহ করে থাকে। ইন্টারনেটের সীমাহীন জগতে সম্ভাবনা অসীম। তবে এ অসীম সম্ভাবনার সুবিধা গ্রহণের সহজ সুযোগের পাশাপাশি অবহেলা এবং সতর্কতার অভাব আমাদের জীবনে নানা সংকট তৈরি করতে পারে। এজন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিতভাবে ডিজিটাল বিশ্বে বিচরণের জন্য প্রত্যেকের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, চাইলে সবকিছুই সম্ভব।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপদ ইন্টারনেটের এসব প্রেক্ষিত নিয়ে দেশজুড়ে সচেতনতা তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের সর্বশেষ উদ্যোগ অনেক ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি । দেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে দেশজুড়ে মানুষকে সচেতন করে তোলা আমাদের দায়িত্ব।’
ইন্টারনেটের ঝুঁকি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হওয়া অত্যন্ত জরুরি। ইন্টারনেটের সীমাহীন সম্ভাবনার সাথে সাথে এর ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানতে বাবা-মা’দের অনলাইনের বিভিন্ন বিষয় পরিচিত হওয়া উচিত। আর এ প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলতে ইউনিসেফ ও টেলিনরের সাথে বাবা-মা’দের জন্য একটি গাইডবই তৈরি করেছে গ্রামীণফোন। এছাড়াও সচেতনতা বৃদ্ধিতে, শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট পরিবেশ সম্পর্কে বোঝাতে এবং বাবা-মা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের এ ব্যাপারে আরও সহজে জানাতে ২০১৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি দেশজুড়ে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
এছাড়াও চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ থেকে অনলাইন নিরাপত্তাসহ শিশুদের নিরাপত্তার নানা বিষয়ে সহায়তা করা হয়। গ্রামীণফোন সচেতনতা বৃদ্ধিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বছরব্যাপী নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে।