সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় সাংবাদিক ইলিয়াছ শেখ (৪৫) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে । রোববার রাতে উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আদমপুর জিওধারা চৌরাস্তা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইলিয়াছ আদমপুর এলাকার মজিবর মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তুষার নামে এক ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘাতক তুষার একই এলাকার জামান ওরফে ফেন্সী জামানের ছেলে। নিহত ইলিয়াছ ৩ ছেলে ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বিজয় পত্রিকার রিপোর্টার ছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাওলাদ হোসেন বলেন, রাত ৯টায় জিওধারা চৌরাস্তা থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ির দিকে ফিরছিলেন ইলিয়াছ। বাজারে আগে থেকেই মাদক ব্যবসায়ি তুষার, তার ছোট ভাই তুর্যসহ তাদের বেশ কিছু সহযোগি অবস্থান করছিল।

ইলিয়াছকে দেখেই তুষার অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। সেদিকে কান না দিয়ে ইলিয়াছ বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ করেই তুষার পেছন থেকে দৌড়ে গিয়ে ইলিয়াছকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এক পর্যায়ে তার পেট ও বুকে ছুরিকাঘাত করলে ইলিয়াছ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ১৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
স্থানীয় একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, কিছুদিন পূর্বে তুষার মাদকসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। এজন্য তুষার ও তার পরিবার ইলিয়াছকে সন্দেহ করছিল। এরা এলাকায় অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগের সঙ্গেও জড়িত। তাছাড়া ঘাতক তুষারের বাবা জামান এলাকায় ফেন্সিডিলের ব্যবসা করতো। বাবার দেখানো পথেই ওই এলাকার তুষার ও তার ভাই তুর্য মাদক ব্যবসা করে।
দৈনিক বিজয় পত্রিকার সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সেন্টু বলেন, ইলিয়াছ তার এলাকার মাদক ব্যবসা এবং অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে তাদের টার্গেটে পরিণত হন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ইতিপূর্বে বন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন তিনি। গত কয়েকদিন ধরে সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাকে জীবন দিয়ে তার মূল্য পরিশোধ করতে হলো। পরিকল্পিভাবে ঘাতকরা ইলিয়াছকে হত্যা করেছে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, সাংবাদিক ইলিয়াছ হত্যার সঙ্গে জড়িত একজনকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031