চট্টগ্রাম : টেকনাফে বিভিন্ন প্রকার বৈধ ব্যবসার আড়ালে নিত্য নতুন কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এরা কারা ? টেকনাফ উপজেলা ও পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্টানের আড়ালে এই অবৈধ মরন নেশা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত দক্ষিণ চট্রগ্রামের, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, আমিরাবাদসহ পাশ্ববর্তী এলাকার দোকানের মালিক ও কর্মচারিরা।
বিভিন্ন সুত্রে খবর নিয়ে আরো জানা যায়, দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে টেকনাফ পৌর শহরের নাম করা বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্টানের মালিক ও কর্মচারিরা তাদের নিজস্ব বৈধ ব্যবসার আড়ালে টেকনাফের গরীব, অসহায়, সাধারণ মানুষদেরকে ব্যবহার করে এবং প্রশাসনের সদস্যদের চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে সু-কৌশলে, ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে ইয়াবা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ব্যবসা করে তারা দুই এক বছরের ব্যবধানে বনে গেছে নামে বে-নামে বাড়ি, গাড়ীসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, টেকনাফের বেশ কিছু দোকানদার অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে ৩-৪ টি ব্যবসা প্রতিষ্টানের মালিক হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক বৈধ ব্যবসার আড়ালে যারা অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ দোকানদার হচ্ছে টেকনাফের আলোচিত বার্মিজ মার্কেটের, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সমস্ত ভদ্রবেশী ইয়াবা পাচারকারি দোকানের মালিকরা দক্ষিণ চট্রগ্রামের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এদিকে টেকনাফ উপজেলার আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দিনের পর দিন সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক প্রতিরোধ করতে দিনের পর কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় টেকনাফ বিজিবি, পুলিশ ও কোষ্টগার্ড সদস্যদের হাতে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা। আটক হচ্ছে ইয়াবা পাচারকারি বাহকরা, এদের মধ্যে কেউ রোহিঙ্গা, কেউ দিন মজুর, কেউ কর্মচারি, এই সমস্ত পাচারকারিরা ইয়াবাসহ ধরা পড়লেও ইয়াবা ব্যবসার মূল হোতারা বার বার থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কারন মূল হোতারা সহজে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার হয় না। তারা থেকে যায় নিজস্ব বৈধ ব্যবসার অন্তরালের অথচ এই সমস্ত ভদ্রবেশী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারনে টেকনাফের সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন, বছরে পর বছর, ইয়াবার  আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে ও ইয়াবার বদনাম মাথায় নিয়ে দুখে দুখে কাঁদছে টেকনাফের সাধারণ মানুষ।

বিজিবি সুত্রে জানা যায়, গতকাল ২৭ জুলাই সকাল ৯টার দিকে হোয়াইক্যং চেকপোষ্টের বিজিবির সদস্যরা যাত্রীবাহী গাড়ীতে তল্লাসী চালিয়ে বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। উক্ত আটককৃত ব্যক্তি হচ্ছে টেকনাফের নাম করা একটি কাপড়ের দোকানের শেয়ার হোল্ডার তার নাম মোহাম্মদ হারুন সেই চট্রগ্রামের লোহাগাড়া থানার আমিরাবাদের মৃত কবির আহমদের পুত্র।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক ইয়াবাসহ ধরা পড়ে কারা ভোগ করে আসা টেকনাফ পৌর শহরের বেশ কয়েক জন যুবক আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমাদেরকে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে টেকনাফে বসবাসরত দক্ষিণ চট্রগ্রামের বিভিন্ন প্রকারের দোকান ব্যবসায়ীরা। তাই আমাদের দাবি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত তাদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসলে দীর্ঘ দিনের অজানা সব গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। এবং ইয়াবা পাচারও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।  এব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ আটককৃত কাপড়ের দোকানদার ইয়াবা পাচারকারি হারুনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, টেকনাফের বাইরে থেকে এসে যারা বৈধ ব্যবসার আড়ালে নিত্য নতুন কৌশলে এই সমস্ত  অবৈধ মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে ধরতে আমাদের সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যারা বাইরে থেকে এসে টেকনাফ শহরে বৈধ ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে দিনের পর দিন টেকনাফের সুনাম নষ্ট করছে। তার পাশাপাশি টেকনাফবাসীর দুর্নামও হচ্ছে। তাই আমি মনে করি এই অবৈধ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার জন্য তথ্য দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। তাদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসতে পারলে টেকনাফবাসী ইয়াবার আগ্রাস ও বদনাম থেকে অনেক মুক্তি পাবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031