পাশাপাশি রুমে দুই বোন রহসজনকভাবে খুন হয়েছেন রংপুর মহানগরীর মধ্য গণেশপুর এলাকায় । একজনের মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে থাকলেও অন্যজনের মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। শুক্রবার দুপুরে ঘরের দরজা ভেঙে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। কে বা কারা কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
নিহত সুমাইয়া আক্তার মীম(১৫) কাপড় ব্যবসায়ী মোকছেদ আলীর মেয়ে ও জান্নাতুল ফেরদৌস মৌ (১৩) বিদ্যুতের মিস্ত্রী মমিনুল ইসলামের মেয়ে। তারা আপন চাচাতো-জেঠাতো বোন। মীম রংপুরের একটি মাদ্রাসায় নবম শ্রেণির ছাত্রী। মৌ বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
ঘরের ভেতর থেকে দরজার সিটকিনি লাগানো থাকলেও ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত পাচ্ছে না পুলিশ। তবে একটি ছেঁড়া হেড ফোন ও একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে।
মেঝেতে হেড ফোন থাকলেও মোবাইল ফোন কোথায় গেলো- এই রহস্য উদঘাটন করতে পারলেই খুনের ক্লু পেতে সহজ হবে বলে মনে করছে পুলিশ। হঠাৎ দুই কিশোরীর এমন মৃত্যুতে আহাজারি চলছে পাড়া জুড়ে।
এদিকে এই জোড়া খুনের রহস্য উদ্ধারে পুলিশের একাধিক গোয়েন্দা মাঠে কাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) শহিদুল্লাহ কাওসার, উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আবু মারুফসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গেছেন। শুক্রবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলাও হয়নি।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মীম ও মৌ রাতের খাবার খেয়ে মৌদের বাসায় ঘুমায়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তাদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজায় জোরে ধাক্কা মারে। এতেও কোনো শব্দ না পেলে পুলিশকে খবর দেয় প্রতিবেশীরা। দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাদের দুজনের লাশ পায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জান্নাতুল ফেরদৌস মিম ঘরের পূর্বদিকের রুমের মেঝেতে পড়েছিল। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন এবং নাকে রক্ত রয়েছে। এছাড়াও তার রুম থেকে একটি ছেঁড়া হেড ফোন পাওয়া যায়। পাশের (পশ্চিমের) রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল সুমাইয়া আক্তার মীম।
প্রতিবেশীরা বলছেন, মৌয়ের বাবা মমিমুল ইসলাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গত কয়েকদনি হলো ঘুরতে গেছেন কুড়িগ্রামের উলিপুরে।
মীমের বাবা মোকছেদ আলী জানান, কেন এই হত্যাকান্ড হলো তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে এর আসল ঘটনা উদ্ধার করার দাবি জানান তিনি।
ঘটনাস্থলে যাওয়া নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার শহিদুল্লাহ কাওসার বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। কী কারণে এই ঘটনা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে তদন্ত চলছে।