সরকার পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে । ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি ন্যায্যমূল্যে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। এই পেঁয়াজ এখন থেকে অনলাইনেও কেনা যাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার বিকালে সচিবালয়ে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ ও সরবররাহ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
টিসিবি গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে খোলাবাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। একজন ক্রেতা টিসিবির বিক্রয়কেন্দ্র থেকে সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পেঁয়াজের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে টিসিবির পাশাপাশি এবার ই-কমার্সের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে।’ কেবল জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গতকাল ১০৭টি অভিযান পরিচালনা করে বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী জানান, বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ আছে। তাই, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পরিপ্রেক্ষিতে আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ না কেনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুদ আছে। বেসরকারি আমদানিকারকদের পাশাপাশি ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ বিকল্প উৎস থেকে আমদানি করা হচ্ছে। তাই পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, গতবারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা এবার আগেভাগেই পেঁয়াজের মজুদ গড়ে তোলার প্রস্তুতি গ্রহণ করি। গত ১৫ দিন আগে থেকেই আমরা ভারতের পেঁয়াজের বাজার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে মূল্য বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প উৎস তুরস্ক ও মিসর থেকে আমদানির উদ্যোগ নেই। তাই, এবার পেঁয়াজ নিয়ে কোন ধরনের সংকট তৈরি হবে না বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, পেঁয়াজের আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতি নজর রাখার কারণে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। টিসিবি খোলাবাজারে ৩০ টাকা মূল্যে সারাদেশে পেঁয়াজ বিক্রি করবে, যা আগামী মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারত সরকারের সাথে কূটনীতিকভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভারত থেকে ২১ টাকায় পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে, অন্যদিকে তুরস্ক ও মিসর থেকে আমদানি খরচ পড়ে ৪৩ টাকা। এ কারণে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রতি আমদানিকারকরা বেশি আগ্রহী।
গত বছরের তুলনায় দেশে এবছর প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়েছে বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।