ঢাকা : পুলিশ ও র্যাবের বেশ কিছু সফল অভিযানে সুন্দরবনে বনদস্যু বাহিনীর সংখ্যা কমে গেলেও জেলে বাওয়ালীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা কমেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং ভয়ঙ্কর দস্যু বাহিনী আত্মসর্ম্পণ করার মধ্যেও সুন্দরবনে বনদস্যুদের অত্যাচার থামছে না।
মাস দেড়েক আগে সুন্দরবনের বনদস্যু কাদের মাস্টারসহ বাহিনীর ১২ সদস্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করলে জেলে বাওয়ালীদের মাঝে আশার সৃষ্টি হয়। গত ১৫ জুলাই সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনী প্রধান ইলিয়াছ ও আরেক কুখ্যাত বনদস্যু প্রধান মজনুসহ ইলিয়াছ বাহিনীর ১১ সদস্য ১১টি অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমপর্ণের পর সুন্দরবনের বনজীবীদের মাঝে আশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু গত কয়েক দিনের ব্যবধানে আবারো জেলে বাওয়ালীদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। বনদস্যুদের অত্যাচারের মাত্রা এক বিন্দু কমেনি বরং আগের চেয়ে বেড়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে বনজীবীরা জানান, বর্তমানে পশ্চিম সুন্দরবনে ৬টি বনদস্যু বাহিনীর শতাধিক অস্ত্রধারী ক্যাডার খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা বনজীবীদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে। মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরি হলে তাদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। বর্তমানে পশ্চিম সুন্দরবনে ৬টি বনদস্যু বাহিনীর মধ্যে জাহাঙ্গীর বাহিনী অন্যতম। কুখ্যাত এ বাহিনীর ৩২ সদস্যের হাতে রয়েছে ৩২টি আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর রয়েছে কুখ্যাত বনদস্যু নোয়ামিয়া বাহিনী। জানা যায়, সুন্দরবনে যতগুলো বনদস্যু বাহিনী আছে তার মধ্যে একমাত্র ২২ জনের এই বাহিনীটির হাতে ভারী এবং অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের সর্বত্রই এরা বিরজমান। তবে সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছী, চুনকুড়ি খুলনা রেঞ্জের আড়পাঙ্গাশিয়া, বাটলু শিবশা এলাকায় বেশি চলাফেরা করে থাকে। এরপর রয়েছে আলিফ বাহিনী। ১৪/১৫ জনের দলের প্রত্যেকের হাতে রয়েছে ডাবল ব্যারেল বন্দুক, ১ নলা বন্দুকসহ পাইপগান।
এরপর রয়েছে রবিউল বাহিনী। বাহিনীর প্রধান রবিউল ওরফে বাটকা কয়রা উপজেলার মঠবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। মাত্র পাঁচজনের এ বাহিনীর হাতে রয়েছে ড্যাবল ব্যারেল বন্দুক, একনলা বন্দুক, ২টি পিস্তল ও পাইপগান।
এ বাহিনীর অন্যতম সদস্য উপজেলার ২ নং কয়রা গ্রামের সোহরাব ডাকাত রয়েছে। দীর্ঘ দিনের পুরনো এ বনদস্যু বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে মুক্তি নিয়ে ফিরে এসে পুনরায় সুন্দরবনে দস্যুতা চালিয়ে আসছে। এই বাহিনীতে রয়েছে ৪ নং কয়রা এলাকার রোকন ও শাহাজান। এরপর রয়েছে আরেক কুখ্যাত বনদস্যু খোকাবাবু বাহিনী। এর বাহিনী প্রধান খোকা। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকার ৯ নং সরা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। দির্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে দস্যুতা চালিয়ে আসছেন। ৮ জনের দলে রয়েছে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র। প্রতিটি দস্যুবাহিনীকে জেলে প্রতি সর্বনিম্ন (কাঁকড়া ধরা জেলে) ৬ মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। জেলেরা লোকালয়ে থাকা বনদস্যুদের সহযোগীদের হাতে নগদ ১৫ হাজার টাকা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ করে থাকে। বনদস্যু সহযোগীরা মুঠোফোনের মাধ্যমে ১০ টাকার নোটের নম্বর এবং বনজীবীর নাম তুলে দেন বনদস্যুদের টালি খাতায়। প্রতিটি বনদস্যু দলের জন্য জেলেদের আলাদা আলাদা টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। সংগ্রহকৃত ১০ টাকার নোটের টোকেন দস্যুদের দেখিয়ে টালি খাতার নম্বর মিললে তাদের ছেড়ে দেয়। কিন্ত যারা টোকেন দেখাতে পারে না তাদের জিম্মি করে জেলে প্রতি ২৫/৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। তবে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে দাবি করে কয়রা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সমশের আলী জানান, বনদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো দস্যুকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত সুন্দরবনে নজরদারি করছি। নতুন কোনো বাহিনী এখন বনে নেই। যারা আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। – See more at: http://www.teknafnews.com/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be/#sthash.74LTXvK3.dpuf
মাস দেড়েক আগে সুন্দরবনের বনদস্যু কাদের মাস্টারসহ বাহিনীর ১২ সদস্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করলে জেলে বাওয়ালীদের মাঝে আশার সৃষ্টি হয়। গত ১৫ জুলাই সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনী প্রধান ইলিয়াছ ও আরেক কুখ্যাত বনদস্যু প্রধান মজনুসহ ইলিয়াছ বাহিনীর ১১ সদস্য ১১টি অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমপর্ণের পর সুন্দরবনের বনজীবীদের মাঝে আশার সৃষ্টি হয়। কিন্তু গত কয়েক দিনের ব্যবধানে আবারো জেলে বাওয়ালীদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। বনদস্যুদের অত্যাচারের মাত্রা এক বিন্দু কমেনি বরং আগের চেয়ে বেড়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে বনজীবীরা জানান, বর্তমানে পশ্চিম সুন্দরবনে ৬টি বনদস্যু বাহিনীর শতাধিক অস্ত্রধারী ক্যাডার খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা বনজীবীদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে। মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরি হলে তাদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। বর্তমানে পশ্চিম সুন্দরবনে ৬টি বনদস্যু বাহিনীর মধ্যে জাহাঙ্গীর বাহিনী অন্যতম। কুখ্যাত এ বাহিনীর ৩২ সদস্যের হাতে রয়েছে ৩২টি আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর রয়েছে কুখ্যাত বনদস্যু নোয়ামিয়া বাহিনী। জানা যায়, সুন্দরবনে যতগুলো বনদস্যু বাহিনী আছে তার মধ্যে একমাত্র ২২ জনের এই বাহিনীটির হাতে ভারী এবং অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের সর্বত্রই এরা বিরজমান। তবে সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছী, চুনকুড়ি খুলনা রেঞ্জের আড়পাঙ্গাশিয়া, বাটলু শিবশা এলাকায় বেশি চলাফেরা করে থাকে। এরপর রয়েছে আলিফ বাহিনী। ১৪/১৫ জনের দলের প্রত্যেকের হাতে রয়েছে ডাবল ব্যারেল বন্দুক, ১ নলা বন্দুকসহ পাইপগান।
এরপর রয়েছে রবিউল বাহিনী। বাহিনীর প্রধান রবিউল ওরফে বাটকা কয়রা উপজেলার মঠবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। মাত্র পাঁচজনের এ বাহিনীর হাতে রয়েছে ড্যাবল ব্যারেল বন্দুক, একনলা বন্দুক, ২টি পিস্তল ও পাইপগান।
এ বাহিনীর অন্যতম সদস্য উপজেলার ২ নং কয়রা গ্রামের সোহরাব ডাকাত রয়েছে। দীর্ঘ দিনের পুরনো এ বনদস্যু বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে মুক্তি নিয়ে ফিরে এসে পুনরায় সুন্দরবনে দস্যুতা চালিয়ে আসছে। এই বাহিনীতে রয়েছে ৪ নং কয়রা এলাকার রোকন ও শাহাজান। এরপর রয়েছে আরেক কুখ্যাত বনদস্যু খোকাবাবু বাহিনী। এর বাহিনী প্রধান খোকা। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকার ৯ নং সরা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। দির্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে দস্যুতা চালিয়ে আসছেন। ৮ জনের দলে রয়েছে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র। প্রতিটি দস্যুবাহিনীকে জেলে প্রতি সর্বনিম্ন (কাঁকড়া ধরা জেলে) ৬ মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। জেলেরা লোকালয়ে থাকা বনদস্যুদের সহযোগীদের হাতে নগদ ১৫ হাজার টাকা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ করে থাকে। বনদস্যু সহযোগীরা মুঠোফোনের মাধ্যমে ১০ টাকার নোটের নম্বর এবং বনজীবীর নাম তুলে দেন বনদস্যুদের টালি খাতায়। প্রতিটি বনদস্যু দলের জন্য জেলেদের আলাদা আলাদা টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। সংগ্রহকৃত ১০ টাকার নোটের টোকেন দস্যুদের দেখিয়ে টালি খাতার নম্বর মিললে তাদের ছেড়ে দেয়। কিন্ত যারা টোকেন দেখাতে পারে না তাদের জিম্মি করে জেলে প্রতি ২৫/৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। তবে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে দাবি করে কয়রা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সমশের আলী জানান, বনদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো দস্যুকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত সুন্দরবনে নজরদারি করছি। নতুন কোনো বাহিনী এখন বনে নেই। যারা আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। – See more at: http://www.teknafnews.com/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be/#sthash.74LTXvK3.dpuf