প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার এ ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। বিনোদন বা খেলার জন্য এবং সামরিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহারের জন্য অনুমতি লাগবে না। তবে বিনোদনের জন্য পাঁচ কেজির বেশি ওজনের ড্রোন ব্যবহার করতে অনুমতি নিতে হবে।মন্ত্রিসভা এমন বিধান রেখে ‘ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা- ২০২০’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চলছিল ড্রোন কি সবাই তার ইচ্ছামতো পরিচালনা করতে পারবে, না এগুলোর জন্য কোনো রেগুলেশন প্রয়োজন আছে? এটা নিয়ে ৭/৮ মাস থেকে আলোচনা এবং মিটিং করা হয়। সবার মতামত নিয়ে চারটা শ্রেণি করে দেয়া হয়েছে।’

‘ক’ শ্রেণি: বিনোদনের জন্য এই শ্রেণি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খেলনা হিসাবে ব্যবহারের ড্রোন এ শ্রেণিতে করবে। এর ওজন অবশ্যই পাঁচ কেজির কম হতে হবে। পাঁচ কেজির বেশি হলে এটা আর বিনোদনের মধ্যে পড়বে না।

‘খ’ শ্রেণি: অবাণিজ্যিক এই শ্রেণিতে বিভিন্ন কাজের জন্য পাঁচ কেজির বেশি ওজনের ড্রোন ওড়ানো যাবে, সেক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য থাকতে পারবে না।

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অনেকে (ড্রোন ব্যবহার করে) বিভিন্ন জিনিস দেখেন (পর্যবেক্ষণ করেন)। যেমন- বনের সার্ভে, গবেষণা বা বই লেখার মতো নিজের কাজের জন্য।’

‘গ’ শ্রেণি: বাণিজ্যিক কাজের জন্য এই শ্রেণিতে পাঁচ কেজির বেশি ওজনের ড্রোন ওড়ানো যাবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ‘কোথাও সার্ভে করবে জমিজমা বা ফসলের ওপরে, কোনো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি করবে। আনারসের জেলি করার জন্য ইন্ডাস্ট্রি করতে চান, সে হয়তো পার্বত্য চট্টগ্রামে একটা সার্ভে করতে পারে কি পরিমাণ প্রোডাকশন আসতে পারে, কারা চুক্তিতে ফার্মার হতে পারে, এসব বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য।’

‘ঘ’ শ্রেণি: রাষ্ট্রীয় বা সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য এই শ্রেণি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কাজ, যেমন পদ্মা সেতুতে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। …আমরা গত চার বছর থেকেই ড্রোন ব্যবহার করছি। ড্রোন দিয়ে সার্ভে করে যা যা দরকার করছি। মাতারবাড়িতে ড্রেজিং করতে হবে। বড় শিপ আসতে পারবে না। যেমন মহেশখালীতে কিছু করল। এগুলোর জন্য মডার্ন টেকনোলজি হলো ড্রোন। এগুলোর জন্য বা আর্মির যে ড্রোন সেটা ‘ঘ’ শ্রেণিভুক্ত। এসব কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমতি লাগবে না।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিনোদন বা খেলার জন্য এবং সামরিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহারের জন্য অনুমতি লাগবে না।

যেসব ক্ষেত্রে ড্রোন ওড়াতে অনুমতি নিতে হবে, সেই অনুমতি কার কাছ থেকে নিতে হবে তা সিভিল এভিশেয়ন নির্দিষ্ট করে দেবে বলেও জানান সচিব।

ড্রোন কোথায় ওড়ানো যাবে বা যাবে না- সেই প্রশ্নে আনোয়ারুল বলেন, ‘গ্রিন, রেড এবং ইয়োলো জোন করে দেয়া হয়েছে। খেলনা বা বিনোদনের জন্য ৫০০ ফুটের বেশি ওপরে যেতে পারবে না। বাকিগুলোকে অনুমতি নিতে হবে।’

তিনি বলেন, এর মধ্যে রেড জোনে ড্রোন ওড়ানো সাধারণের জন্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যেমন- বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে। পদ্মা সেতুতেও কাউকে ড্রোন ওড়াতে দেওয়া হবে না। ‘কি পয়েন্ট ইন্সটেলশন’ বা কেপিআইয়ের ভেতরে ড্রোন ওড়ানো যাবে না। এসব এলাকায় ড্রোন ওড়াতে শুধু সিভিল এভিয়েশনের অনুমতি নিলেই হবে না, কেপিআই অথরিটির কাছ থেকেও অনুমতি নিতে হবে। যেমন আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা পদ্মার ওপর একটা ডকুমেন্টারি করবে, তখন সিভিল এভিয়েশন অনুমতি দিলেই হবে না, কেপিআই অথরিটি থেকেও অনুমতি লাগবে।’

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কেউ বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহার করতে চাইলে সেটা অথরিটি ডিফাইন করে দেবে বা অনলাইনে এর ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031