গণমাধ্যম ধুঁকছে করোনার উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে । এই অবস্থায় গণমাধ্যমের সহায়তায় সরকারের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। মঙ্গলবার দুপুরে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, করপোরেট কর ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামাতে হবে। নিউজপ্রিন্টের ওপর থেকে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করতে হবে। বিজ্ঞাপন আয়ের উৎসে কর ৪ শতাংশের স্থলে ২ শতাংশ করতে হবে। কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশ আবগারি শুল্ক কমিয়ে শূন্য করতে হবে। টেলিকম সেক্টরে মোবাইলের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।

ইন্টারনেটের ওপরের ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে।

করোনা পুষে রেখে অর্থনীতি সচল হবে না, দুর্নীতি পুষে রেখে করোনা মোকাবেলা করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন ইনু। বলেন, ক্যাসিনো বন্ধে যেভাবে বুলডোজার চালানো হয়েছিল ঠিক, তেমনভাবে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিবাজদের উপর বুলডোজার চালাতে হবে। তিনি স্বাস্থ্যখাতে অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা ও ভয়ঙ্কর দুর্নীতি দূর করার দাবিও জানান।

জাসদ সভাপতি বাজেটে বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের সমালোচনা করে বলেন, সঠিকভাবে অর্থমন্ত্রী অগ্রাধিকার নির্ণয় করলেও খাতভিত্তিক বরাদ্দ গতানুগতিক। এমন কোনো বরাদ্দ নেই যেটা স্বাস্থ্যসেবার খোলনলচে বদলে দিয়ে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে। নতুন দরিদ্র ও নতুন কর্মহারা কাজপ্রত্যাশী ২৬ লাখ লোককে একটি স্থায়ী দিকে নিয়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। রাজস্ব খাত, ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজার সংস্কারের দাবির বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই।

ইনু আরো বলেন, স্বাস্থ্য খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং দুটি প্রকল্প মিলিয়ে ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু মূল বরাদ্দ ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গতবার এটা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থ্যাৎ মূল বরাদ্দ কমে গেছে। এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য খাতে তিনটি চাহিদা। কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা, জিডিপির ৫ শতাংশ দিতে হবে এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তাই এ খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দে হবে না।

দেশে এখন অস্বাভাবিক সময় যাচ্ছে উল্লেখ করে জাসদ সভাপতি বলেন, করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং প্রধানমন্ত্রীর ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ছাড়া বাজেটের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ গতানুগতিক, গদবাঁধা এবং ছকের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এবার দরকার ছিল ছকের বাইরে একটা বাজেট। কিন্তু বাজেট দেখে মনে হচ্ছে দেশে করোনা বলে কিছু নেই। করোনার অভিঘাতও কিছু নেই। এটি অস্বাভাবিক সময়ের একটি স্বাভাবিক বাজেট মাত্র।

তিনি আরো বলেন, করোনার অভিঘাতে নতুন করে যারা কর্মহীন হয়ে গ্রামে ফিরবে, যে প্রবাসীরা দেশে ফিরবে, শ্রম বাজারে নতুন করে যে ২৬ লাখ যুবক প্রবেশ করবে তাদের কর্মসংস্থান ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। কৃষি-মৎস্য-পোল্ট্রি-প্রাণী সম্পদ খাত সংকটে অর্থনীতিকে যে শক্তি দেয় সেই কৃষি ও কৃষির উপখাত, কৃষক ও খামারীদের সরাসরি আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা খাতেও বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031