ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি মানবপাচার ও অর্থপাচারের মত আন্তর্জাতিক অপরাধ ও দুর্নীতির ঘটনায় সংসদ সদস্যের অভিযুক্ত হওয়াকে বাংলাদেশের রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধিত্বে দুর্বৃত্তায়নের একটি অসম্মানজনক দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছে )। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি সংসদের মর্যাদার স্বার্থে দ্রুত কার্যকর তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় সংসদের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথম থেকেই সরকার, জাতীয় সংসদ, দুদক, ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট, রাজস্ব কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই অভিযোগের ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি, উল্টো দায়মুক্তির চেষ্টার লক্ষণ দেখা গেছে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানবপাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ নিয়ে কুয়েতের সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তথাকথিত তদন্তের পর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আর আমাদের দেশের সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাতেই আশস্ত থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকেও কোন উদ্যোগের কথা জানা যায়নি। এমনকি সম্প্রতি ওই সংসদ সদস্যকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার ও তার সম্পদ বাজেয়াপ্তের পদক্ষেপের সংবাদ প্রকাশের পরও সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী একাধিকবার জানিয়েছেন, কুয়েত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালে তাদের কিছু করার নেই। দেশের সুনাম আর হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ যেখানে জড়িয়ে আছে, সেখানে সরকারের এধরনের উদাসীনতা একইসঙ্গে লজ্জার ও আশঙ্কার।
কুয়েত সরকারের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের অপেক্ষায় না থেকে স্বপ্রণোদিতভাবে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত ছিলো।
ড. জামান বলেন, যে হাজার হাজার শ্রমিককে কাজ দেয়ার নামে পাচার করা হয়েছে এবং কার্যত: জিম্মী বানিয়ে দফায় দফায় অর্থ আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে, তারা সবাই এদেশেরই নাগরিক। এই পাচারের ঘটনায় দেশের ভেতরে নিশ্চিতভাবেই একটি মানবপাচার চক্র গড়ে তোলা হয়েছিল, যাতে সরকারি-বেসরকারি এক বা একাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতাও অনিবার্য। যে সকল আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠেছে তা বাংলাদেশেও ঘোরতর অপরাধ। তারপরও তদন্তের জন্য কুয়েতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন? এই ঘটনাপ্রবাহ থেকে এটুকু স্পষ্ট যে, বরাবরই অভিযোগের কার্যকর তদন্তে সরকারের রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা ছিলো না এবং এর পেছনে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের দৃশ্যমান যোগসাজশ ছিলো।