পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান হাবিব মনসুর বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন যোগ্য নয় উল্লেখ করে কর পরিধি বাড়ানোর জন্য আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দুই ভাগে ভাগ করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু সরকার তা করেনি। এনবিআরের কাঠামোকে সংস্কার করতে বলেছিলাম। কিন্তু তা বাস্তবে করা হয়নি। ফলে রাজস্ব আদায় হয়নি। সামনেও আদায় সম্ভব না। এ কারণে সরকার এখনি ধার-দেনা করে চলছে। এইভাবে চললে আগামী ৬ মাস পর টাকা ছাপিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন দিতে হবে।
তিনি বলেন, এমনটা হলে সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক। তবে এ সময় এখনও আসেনি। কিন্তু সময় আসতে বেশি দূরে নয়।
শনিবার ‘সিপিডির বাজেট সংলাপ ২০২০’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান হাবিব মনসুর বলেন, ধারাবাহিকভাবে এই সময়ে ১ বছরের বাজেট করা উচিত হয়নি। বরং ৬ মাস অন্তর অন্তর দুটি বাজেট করা উচিত ছিলো। এর মধ্যে প্রথম ৬ মাস করোনা মোকাবিলায়। পরের ৬ মাস করোনা পরবর্তী করণীয় কেন্দ্রীক করা উচিত ছিলো।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, করোনার কারণে ৬-৯ মাস সময় ধরে যারা বেকার হয়েছেন। তাদের বেঁচে থাকার জন্য ৩-৫ হাজার টাকা করেও বিশেষ ফান্ড দেয়া যেতো। কিন্তু সেটা করা হয়নি।
বাজেটে কারোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের লাইফ সাপোর্ট, স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার ও বরাদ্দ বাড়ানোর দরকার। এক্ষেত্রে সবচেয়ে যোগ্য ও সঠিক লোকদের দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ম্যানেজমেন্ট করা উচিত। কারণ এখনো করোনা আক্রান্ত মানুষ গাড়ি ও রাস্তায় মারা যাচ্ছে।
মন্দ ঋণ কমেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই তথ্যের সমালোচনা করে ব্রাক ব্যাংকের এই চেয়ারম্যান নিজের ব্যাংকের উদাহরণ দিয়ে বলেন, করোনার ফলে ব্রাক ব্যাংকে মন্দ ঋণ বেড়েছে। বাস্তব চিত্র হলো এনপিএলের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। ’
ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ, নাইম রাজ্জাক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহেমদ, এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ব্যরিস্টার নিহাদ কবীর প্রমুখ।
ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের ভারসাম্যরক্ষা করতে হবে। টাকা ছাপিয়ে বেতন দিতে হবে এটা আমরা কেউই চাই না। প্রতি দুই মাস পর পর বাজেটের বিষয় পর্যলোচনা করার প্রস্তাব দিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ না আনতে পারলে আমাদের কিছুই হবে না। অর্থনীতি সামনে অগ্রসর হবে না।