কর্মস্থল সচিবালয়। নিজেকে ২৪তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। বিয়ে করবেন তাই এ পরিচয়ে ‘বায়োডাটা’ বানিয়ে ঘটকের মাধ্যমে পাঠাতেন বিত্তবান পরিবারগুলোতে। বিশেষ করে যাদের অবিবাহিত ও চাকরিজীবী মেয়ে আছে। কথাবার্তা শুরুর পর মেয়ের মায়ের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পিএইচডি কিংবা বদলির অজুহাতে হবু শ্বশুরবাড়ি থেকে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। পরবর্তীতে টাকা ফেরৎ না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেন। এভাবে পাঁচজনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ভূয়া উপ-সচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম গোলাম মোস্তফা।
রবিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।
সোমবার দুপুরে ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির মিডিয়ার শাখার কর্মকর্তা অ্যাডিশনাল এসপি ফারুক হোসেন। তিনি জানান, সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াডের একটি বিশেষ দল গতরাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া উপ-সচিব গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ২৪ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা ও সচিবালয়ে কর্মরত বলে পরিচয় দিতেন। এই প্রতারক বিয়ের প্রলোভনে পাঁচজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ফারুক হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি জানতে পেরেছে, গ্রেপ্তার মোস্তফা নিজেকে কখনো ম্যাজিস্ট্রেট আবার কখনো উপ-সচিব অথবা সচিবালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিত। তার মূল টার্গেট ছিল বিত্তবান পরিবারের অবিবাহিত ও চাকরিজীবী মেয়ে। প্রথমে টাকার বিনিময়ে ঘটকের কাছ থেকে পাত্রীর বায়োডাটা সংগ্রহ করে। পরে পরিবারগুলোর সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে যোগাযোগ করত। একসময় পাত্রীর মায়ের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে আস্থা অর্জন করত। এরপর পিএইচডি করতে বিদেশ যাত্রা, দুদকে ঘুষ দেয়া, বদলি বাতিল করাসহ নানা অজুহাতে বিভিন্ন জনের (পাত্রীর পরিবার) কাছ থেকে টাকা ধার নিত। পরবর্তীতে টাকা ফেরৎ না দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আত্মগোপনে চলে যেত।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতারণার শিকার বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত একজন নারী রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় গোলাম মোস্তফার নামে প্রতারণার মামলা করে। যার তদন্ত পায় সিআইডি। এই অভিযোগে অভিযুক্ত মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করা হয়।