লাফিয়ে লাফিয়ে দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে । এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫’শ। এই যখন অবস্থা তখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে বেশি বেশি টেস্ট প্রয়োজন। এ কারণে প্রায় ১৩ টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে করোনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩৫০০ টাকা। তবে নানা কৌশলে সরকারের বেঁধে দেয়া সাড়ে ৩ হাজার টাকার সঙ্গে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় করোনা টেস্ট করার কথা থাকলেও নানান অজুহাতে কোনো কোনো হাসপাতাল টেস্ট করাচ্ছে না।
সাদিয়া আফরিন। পেশায় চিকিৎসক।
গত ২৪ মে ঈদের আগের দিন ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়ে তার অভিযোগ তুলে ধরেন। সেখানে তিনি রাজধানীর দুটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এর একটি পান্থপথে, অন্যটি ধানমন্ডিতে।তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কয়েদিন ধরে আমার করোনার উপসর্গ। তাই সরকারি হাসপাতাল অনেক সময় লাগবে ভেবে বেসরকারি হাসপাতালে যাই। ধানমন্ডির ওই হাসপাতালে স্যাম্পল ও ডেংগু টেস্টের নামে আমার কাছে ৪৫০০ টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু তাদেরকে আমি বলি আমি চিকিৎসক। সরকারের নির্ধারিত ফি রাখেন। কিন্তু কেউ আমার কথা কর্ণপাত করেননি। পরে এখান থেকে যাই পান্থপথের ওই হাসপাতালে, সেখানেও চিকিৎসকের ফির নাম এক হাজার টাকা বেশি চাওয়া হয় আমার কাছে।
রাজধানীর বড় দুই হাসপাতালে তিনি নিজে চিকিৎসক পরিচয় দেয়ার পরও কোনো লাভ হয়নি তার। পরে করোনা টেস্ট না করেই বাসায় ফিরে গেছেন ডা. সাদিয়া আফরিন। পুরো ঘটনার বিস্তারিত লিখে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন তিনি।
এদিকে এই প্রতিবেদক আজ(মঙ্গলবার) পরিচয় না দিয়ে
ধানমন্ডির ওই হাসপাতালে ফোন দিয়ে এই ঘটনার সত্যতা পান। হটলাইন থেকে বলা
হয় করোনা টেস্টের জন্য চার হাজার লাগবে। সাথে ডেঙ্গু টেস্টসহ আরো
পাঁচ’শ। কিন্তু অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কারণ জানতে চাইলে ,হটলাইন থেকে কোনো
উত্তর দিতে পারেননি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমতি প্রাপ্ত ১৩ টি
হাসপাতালের প্রায় দশটি হাসপাতালের হট লাইনে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। এর
মধ্যে কোনোটিতেই নির্দিষ্ট ফি তে করোনা টেস্ট করানো হচ্ছে না বলে জানা
গেছে। বিভিন্ন অজুহাতে এসব হাসপাতালগুলোতে নেয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা। তবে
কিছু কিছু হাসপাতাল এখনো তাদের কর্যক্রম শুরু করেনি।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিমা সুলতানা বলেন, আমারা বেশ কয়েকটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু আমাদের এতো লোকবল নেই। আমরা বিষয়টি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিবো। বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা টেস্টের পাশাপাশি ডেঙ্গু টেস্টের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সর্বশেষ একটি সিদ্ধান্তে বলেছি করোনার পাশাপাশি যেনো ডেঙ্গু টেস্ট করানো হয়। সেই জন্য হয়তো পাঁচ’শ টাকা বেশি নিচ্ছে। কিন্তু এর বেশি নিলে অবশ্যই সেটা অমার্জনীয়।