সরকার আগামী ২০ মে থেকে পরবর্তী ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জলসীমায় সব ধরনের নৌযান দিয়ে মাছ ও ক্রাস্টাশিয়ান্স (চিংড়ি, কাটল ফিশ প্রভৃতি) ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে । এরইমধ্যে জননিরাপত্তা বিভাগের মাধ্যমে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলার পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ বাস্তবায়নে চিঠি দেওয়া হয়েছে

রবিবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনলাইন সভায় এসব তথ্য জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সকল প্রকার নৌযান কর্তৃক সকল প্রকার মৎস্য ও ক্রাস্টাশিয়ান্স (চিংড়ি, লবস্টার, কাটল ফিস প্রভৃতি) আহরণ নিষিদ্ধ। এ সময় বিদেশি বা দেশি মাছ আহরণকারীদের মৎস্য আহরণ যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে।’

দেশের অর্থনীতির জন্য, মানুষের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য এটা করতে হবে, যোগ করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘পুষ্টির অভাব দূর করতে হলে মাছের চাষ বৃদ্ধি করা খুবই দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, মাছের যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমরা অর্জন করেছি, এর পরিসরকে আরো বাড়াতে হবে। যাতে বিদেশে মাছ রপ্তানি করে গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।’

ধানের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করতে না পারলে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সংকট থেকে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন শ ম রেজাউল করিম।

এ সময় মন্ত্রী রেজাউল করিম জানান, সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন মৎস্য আহরণে বিরত থাকা জেলেদের আমরা মাসিক ৪০ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। করোনা পরিস্থিতিতে এটা বন্টন করা জটিল কাজ। এ কাজে সম্পৃক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্যজীবীদের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির খাতটি অনেক উন্নতি ঘটেছে। খাদ্য সহায়তায় পরিবহন খরচ ছিলো না। পরিবহন খরচ সরকারের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে পৌঁছানো হবে।’

অনলাইন সভায় সংযুক্তদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘মাছকে বেড়ে উঠতে দেয়া এবং মাছকে অবৈধভাবে আহরণ করতে না দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত আমরা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টি ও পরিষ্কারভাবে বলবো, আপনারা কঠোর অবস্থান নেবেন। কাউকে আইনের বাইরে কোন কিছু করতে দেবেন না। সেক্ষেত্রে যেকোন চাপ আমরা মোকাবেলা করবো।’

সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোন গাফিলতি মানা হবে না উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে রেজাউল করিম বলেন, ‘দায়িত্ব পালনে কোন শৈথিল্য দেখা গেলে রাষ্ট্রের নিয়ম অনুসরণের স্বার্থে সেটাকে কঠোরভাবে গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’

সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, যুগ্ম সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি, নৌ-পুলিশের ডিআইজি ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031