সদর থানা পুলিশ চরমুগরিয়া এলাকায় বানর হত্যার অভিযোগে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করে । এ সময় মধ্য খাগদী এলাকার লতু হাওলাদারের স্ত্রী শাহানা বেগম (৫৫) পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বানর হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে বন সংরক্ষণ আইনের মামলায় আসামি করে রবিবার বিকালে আদালতে পাঠানো হয়
পুলিশ জানায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকায় গত ৫ মে বিকালে ১৬টি বানরকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করে দুস্কৃতিকারীরা। এই ঘটনায় পরের দিন জেলা বন বিভাগের পক্ষ থেকে তাপস কুমার সেনগুপ্ত অজ্ঞাতদের আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় বানর হত্যার অভিযোগ একটি মামলা করেন। এই ঘটনায় শনিবার গভীর রাতে সন্দেহজনকভাবে মাদারীপুর সদর উপজেলার মধ্য খাগদী এলাকার লতু হাওলাদারের স্ত্রী শাহানা বেগম ও তার দেবর আকু হাওলাদারকে আটক করা হয়। পরে পুলিশি হেফাজতে তাদেরকে বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এসময় শাহানাজ বেগম খাবারের সঙ্গে বিষ দেয়ার কথা স্বীকার করেন এবং তাতেই বানর মারা গেছে বলেও জানান। তবে তার দেবর আকু হাওলাদারের এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ‘বানর হত্যার ঘটনায় সদর থানায় মামলা হলে সন্দেহজন দুজনকে আটক করি। এদের মধ্যে শাহানা বেগম নামে এক নারী বানর হত্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানিয়েছেন, খাবারের সঙ্গে বিষ দেন বানরগুলোকে। এতেই বানরগুলো মারা গেছে। তবে কোন ধরনের বিষ সেটা জানা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে। তবে তার দেবর দোষী না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
সামাজিক বন বিভাগের বন সংরক্ষক তাপস কুমার সেনগুপ্ত বলেন, ‘ওই নারী দোষ স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তিন মাস আগেও বিষ দিয়ে আরো আটটি বানর মেরেছেন। তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এই তরতাজা প্রানীগুলোর হত্যাকারীর সঠিক বিচার করা যাবে বলে বিশ্বাস করি।’
এই ঘটনায় অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন নাহার নাজীমকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম এই তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি তিন কার্য-দিবসের মধ্যে মধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু বকর সিদ্দিক ও সহকারী বন সংরক্ষক তাপস কুমার সেনগুপ্ত।
বানর হত্যার ঘটনায় সদর মডেল থানায় ফৌজদারি এবং বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে আলাদা দুটি মামলা করেছেন মাদারীপুর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষণ তাপস কুমার সেন গুপ্ত।