ওএমএসের ১০ টাকা কেজি দরের চাল গ্রহিতা হিসেবে তালিকায় তার নাম আছে। প্রায় ২৫ বছর ধরে ভ্যানচালক বাবর আলী। বছরে পাঁচ মাস ১০ টাকা কেজি দরে তার চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি চাল পান না। সারাবছর ভ্যান টেনে বাজার থেকে চাল কিনেই খেতে হয় প্রায় ৫৫ বছর বয়সের বাবর আলীকে।

বাবরের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের নলখোলা গ্রামে। দীর্ঘদিন পর বাবর তালিকায় তার নাম থাকার কথা শুনেছেন সম্প্রতি। এ নিয়ে তিনি এপ্রিলের শেষের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারপর কি হয়েছে তা আর জানেন না তিনি। এখন আশায় আছেন, হয়তো ১০ টাকায় চাল পাবেন।

বাবর বলেন, তালিকাটা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। তখন তাদের এলাকায় ওএমএসের ডিলার ছিলেন আবদুল কুদ্দুস। দেড় বছর আগে কুদ্দুস ডিলারশিপ ছেড়ে দেন। তারপর ডিলার হন আবু সাঈদ নামে আরেকজন। কিন্তু কোনো ডিলারই তাকে চাল দেননি। সম্প্রতি তিনি তালিকায় নিজের নাম থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর ইউএনও’র কাছে অভিযোগ দেন।

বাবর আরও বলেন, ৩১১ জন দিনমজুর ব্যক্তির তালিকায় তার নাম আছে ২৮৩ নম্বরে। সুবিধাভোগী হিসেবে সেখানে তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বরও লেখা আছে। বছরে পাঁচ মাস, ১০ টাকা দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে তার চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু পাননি। তালিকায় ২৮৮ নম্বরে থাকা সেলিম রেজা নামে আরেক ব্যক্তিও চাল পান না। তাদের দুজনের চাল ডিলার নিজেই তুলে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হরিয়ান ইউনিয়নের ১, ৪, ৫, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএসের ডিলার আবু সাঈদ বলেন, বাবরের নাম তালিকায় আছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে ৬-৭ বার ১০ টাকার চাল বিক্রি করেছি। তাকে চাল দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কেন অভিযোগ করছেন- তা বলতে পারব না। তিনি দাবি করেন, তালিকার ২৮৮ নম্বরে আগে সেলিম রেজার নাম ছিল। এখন সেখানে আবদুল কুদ্দুস নামে এক ব্যক্তির নাম রয়েছে। তিনি চাল পান, সেলিম পান না।

পবার ইউএনও মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ভ্যানচালক বাবরের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য আমি ইউনিয়ন ত্রাণ কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছি। দু’একদিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন আসবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারও নাম তালিকায় থাকলে তিনি চাল পাবেন, ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। ফাঁকি দিয়ে থাকলে ডিলারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031