দু’দিন আগে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক করা বিশেষত আমদানি-রপ্তানি ফের চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এটি অত্যন্ত সীমিত পরিসরে। এবার তা আরেকটু বাড়ানো যায় কি-না? তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। প্রস্তাব আছে করোনার কারণে যাত্রীবাহী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বা বন্ধন ট্রেন যতদিন বন্ধ থাকছে, ততদিন ওই রেললাইন ব্যবহার করে মালবাহী ট্রেন চলাচলের। এটি পণ্য পরিবহনের একটি বিকল্প ভাবনা। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, করোনার কারণে ভারতজুড়ে কার্যত লকডাউন আর বাংলাদেশে অঘোষিত লকডাউন বা ছুটির এই কঠিন সময়ে ট্রাক যোগে পণ্য পরিবহনে নানা রকম সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ট্রাক ড্রাইভারদের ব্যক্তিগত অনীহা ছাড়াও বাধ্যতামূলক ১৪ দিন করে কোয়ারেন্টিনে থাকা সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আর এ কারণেই ট্রাকের বিকল্প হিসাবে মালবাহী ট্রেন চলাচলের চিন্তা। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় ভারতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি আলোচনার প্রস্তাব রয়েছে।
ওই প্রস্তাবের বিষয়ে কথা হয় বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীনের সঙ্গে। মানবজমিনের জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বলেন, করোনা নিয়ে সতর্কতার মধ্যেও ভারতের সঙ্গে আমদানী-রপ্তানী ফের চালু হয়েছে সীমিত পরিসরে। তবে এটি আরও বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা আছে। বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাবও রয়েছে। এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, রোববার এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।
উল্লেখ্য, বর্তমান মেয়াদে রোববার মাঝরাতে ভারতের লকডাউন শেষ হওয়ার ডেটলাইন ছিল। কিন্তু শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা দেশজুড়ে আরও দু’সপ্তাহ লকডাউন বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এ সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে, তাতে দেশটির বিভিন্ন এলাকাকে ৩টি জোনে চিহ্নিতকরণের কথা বলা হয়েছে। ১৭ ই মে অবধি বাড়ানো ওই লকডাউনে রেড জোন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। তবে গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনের ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা শিথিলতা আনবে বলে আভাস মিলেছে। অর্থাৎ হটস্পট এলাকাগুলো ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে কড়াকড়ি জারি থাকবে। আর ‘গ্রিন জোন’ ও ‘অরেঞ্জ জোন’ এলাকায় জনজীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা শিথিল হতে পারে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আমদানি-রপ্তানির প্রধান পোর্ট বেনাপোল-পেট্টাপোলসহ অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে কেবল আমদানী হবে না-কী রপ্তানিও হবে, তা নিয়ে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারসাম্য রক্ষায় ঢাকার ব্যবসায়ীদের তরফে পণ্য আমদানির পাশাপাশি রপ্তানীর পথ উন্মুক্তকরণেরও দাবি রয়েছে।