করোনা রোগীর সংখ্যা সিলেটে ‘আশঙ্কাজনক’ হারে বাড়ছে । একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১১৫ জন রোগী। অথচ গত ২৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১১০ জন। ১২৩৪ জনের নুমনা পরীক্ষার পর রেকর্ড সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগির অস্তিত্ব মিলেছে। এবং যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের বেশির ভাগই গ্রামের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১০৬৭ জনের নমুনা বিভিন্ন উপজেলা এবং ইউনিয়ন থেকে সংগ্রহ করেছিলো। আর ওই নমুনাগুলো এক সঙ্গে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ কারনে রিপোর্ট এসেছে একদিনে।
ফলে সিলেটজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা আতঙ্ক। রোগি বাড়ার খবরে প্রশাসনের তরফ থেকে লকডাউন মেনে চলতে আরো কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য
বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- এখন আর করোনা রোগি কেবল শহর কেন্দ্রিক নয়।
গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে রোগির সংখ্যা। সামাজিক দুরত্ব না মানার কারনেই
এমনটি হয়েছে। এজন্য খুব দ্রুত করোনা আক্রান্ত রোগিদের চিহিৃত করে তাদের
আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে স্বাস্থ্য কর্মীরা
রয়েছেন।
সিলেটে গত ৫ই এপ্রিল থেকে করোনা রোগি পাওয়া যায়। ৭ই এপ্রিল
থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবের নিয়মিত করোনার নমুনা পরীক্ষা করা
হচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই মিলছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৫ দিনে সিলেটে
মোট ১১০ জন রোগি করোনা আক্রান্ত হন। সিলেট ও ঢাকার ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার
পর পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন হবিগঞ্জে।
স্বাস্থ্য
বিভাগ সিলেটের সহকারী পরিচালক (রোগতত্ব ও নির্নয়) আনিসুর রহমান মানবজমিনকে
জানিয়েছেন- সিলেটের ল্যাবে পরীক্ষার অপেক্ষায় ছিলো প্রায় ৬৬৭ টি নমুনা।
এগুলো গত মঙ্গলবার ঢাকায় পাঠানো হয়। এর বাইরে সিলেটের ৩ জেলা থেকে আরো ৪০০
নমুনা ঢাকার আইইডিসিআরে প্রেরন করা হয়। সব মিলিয়ে আইইডিসিআরে প্রেরন করা হয়
১০৬৭ জনের নমুনা। এই নমুনাগুলো ১০ দিনে জেলা ও উপজেলার সন্দেহভাজন রোগিদের
চিহিৃত করে তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। রিপোর্ট এসেছে শুক্রবার। এতে
দেখা গেছে ৯৯ জনের করোনা পজেটিভ।
তিনি জানান- ৯৯ জনের মধ্যে ২১ জনের
পরিচয় এ পর্যন্ত জানা গেছে। এর মধ্যে ১২ জনই হচ্ছেন হবিগঞ্জে। তিনি বলেন-
সিলেটে করোনা আক্রান্তের পরিধি এখন গ্রাম পর্যন্ত চলে গেছে। ফলে লকডাউন
মেনে চলা ছাড়া এখন বিকল্প নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা আক্রান্ত রোগিকে
আইসোলেটেড করে তার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করছে। একই সঙ্গে খেয়াল রাখা হচ্ছে
যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্বারা কেউ যেনো নতুন করে আক্রান্ত না
হয়। এছাড়া যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের আক্রান্ত হওয়ার সূত্র বের করে
তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও পরীক্ষার আওতায় আনা হবে।
এদিকে- শুক্রবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ১৬৭ জনের মধ্যে ১৬ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। অর্থ্যাৎ তারা করোনা আক্রান্ত। তিনি বলেন- নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে মৌলভীবাজারের কেউ নেই। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের রোগি রয়েছে।