আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সীমিত আকারে তৈরি পোশাক কারখানা চালু করা হলেও তাতে শুধু ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকরা কাজ করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে কারখানার মালিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ।
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ উপকমিটির উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে অসহায় গরিব মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ সময় ওবায়দুল কাদের তার বাসা থেকে ভিডিও কানফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান।
করোনা সংকটের কারণে তৈরি পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক বাজার হাতছাড়া হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিলো উল্লেখ করে কাদের বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যাদেশ বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার প্রেক্ষিতে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ও তার আশপাশের জেলাসমূহের কারখানাগুলো সীমিত আকারে চালু করার অনুমতি দিয়েছেন। এসব কারখানায় ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে। মালিকরা তা মেনে নিয়েছেন। অথচ ঢাকার বাহির থেকে অসংখ্য শ্রমিক ঢাকায় প্রবেশ করছেন চাকরি হারানোর ভয়ে। এখন পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন তারা ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের কাজে লাগাচ্ছেন। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে শ্রমিকদের ঢাকায় আসতে বাধ্য করা হয়েছে। আমি জানি না এ বিষয়ে পোশাক কারখানার মালিকরা কি চিন্তা করছেন।
তিনি বলেন, কারখানায় ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের কাজে লাগানোর কথা বলা হলেও কেন প্রতিদিন চাকরি হারানোর ভয়ে শ্রমিকরা ঢাকায় আসছেন। এ বিষয়ে পোশাক কারখানার মালিকদের সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় আছে। আমি তাদেরকে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করছি। যারা কারখানায় কাজ করছে তাদের স্বাস্থ্যবিধি ও সমাজিক দুরুত্ব মেনেই কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি আমাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আজকে (বৃহস্পতিবার) কথা বলেছি। তিনি আওয়ামী লীগের ত্রাণ উপ-কমিটির কাজের প্রশংসা করে তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটা কথা ভুললে চলবে না, এদেশের অনেক মানুষ যাদের আজকে ঘর নেই। অসংখ্য শিশুসহ মানুষ রেল স্টেশন, বাসস্টেশন, ফ্লাইওভারের নিচেসহ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অনেক মানুষ আজকে গৃহহীন। মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু কন্যার অঙ্গিকার, গৃহহীনদের গৃহ দেয়া। সেই অঙ্গিকার বাস্তাবায়নের তালিকা প্রণয়নে আমাদের দলীয় নেতারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা বলছি ঘরে থাকতে হবে। আমি নিজেও ঘরে আছি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। কিন্তু যাদের ঘর নেই, তারা থাকবে কোথায়? এদের বিষয়েও আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ভাসমান মানুষগুলোর তালিকা প্রণয়ন করার জন্য এবং এদের মধ্যে নিয়মিত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার জন্য। এ ব্যাপরে আমাদের ত্রাণ উপ-কমিটি, আমাদের সহযোগী সংগঠন এবং নেতাকর্মীরা সহযোগিতা করতে পারেন।
কাদের বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয়ী হয়েছি। পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছি। আজকে ভয়াবহ মহামারী সংকটে প্রতিত হয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সংকটও সাহস এবং ধৈর্য্যর সঙ্গে মোকাবেলা করবো।
পরে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গরিব অসহায় মানুষের জন্য ২২০০ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য একেএম রহমতুল্লাহ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম,এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ।