প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কড়া বার্তা দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ করোনা ভাইরাসের কারণে দু:স্থ ও অসহায় হয়ে পড়াদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে । এরই অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ত্রাণ বিতরণে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে চুরি বা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেলে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এসব কারণে সম্প্রতি ত্রাণ চুরি ও আত্মসাতের ঘটনা কমেছে বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
তারা বলেন, ত্রাণ বিতরণের শুরুর দিকে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এসব রোধ করতে আমরা দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিয়ে আমাদের কড়া বার্তা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, গরীব, অসহায় ও দু:স্থদের বরাদ্দ করা ত্রাণ চুরির সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তার ক্ষমা নেই।
এদিকে দেশব্যাপী ত্রাণ কার্যক্রমের খোঁজখবর নিতে মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক। বৈঠকে তারা জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, তাঁতি লীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে করোনা ভাইরাস, ত্রাণ কার্যক্রম ও ধান কাটার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। দলীয় উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের খোঁজ খবর নেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছে পৌঁছে দেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাছে দেশব্যাপী ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে ত্রাণ বিতরণের নির্দেশনা প্রদান করেছি। একইসঙ্গে অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের তালিকা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের করোনা পরিস্থিতিতে দুঃস্থ মানুষের পাশে থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে বলেছি। আমরা তাদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করে প্রয়োজনে দলীয়ভাবে কিভাবে আরো বেশি পাশে থাকা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আগামীতে নিয়মিত বৈঠক করে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করব। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, দেশব্যাপী জেলা ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা কথা বলে সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
দেশের বেশ কয়েকটি জেলার আওয়ামী লীগ নেতারা মানবজমিনকে বলেন, দেশের এই সংকটের সময় জনগণের পাশে থাকতে কেন্দ্রীয় অফিস থেকে বারবার তাগাদা দেয়া হচ্ছে। আমরা ওই নির্দেশনা মেনে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। সংকট শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মানুষের পাশে থাকবো। তারা বলেন, আমাদেরকে দলীয়ভাবে অসহায়, দুঃস্থ ও শ্রমজীবী মানুষের তালিকা করে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টি আমরা আমাদের জেলার বিভিন্ন উপজেলার সভাপতি ও জনপ্রতিনিধিদেরও মোবাইল ফোনে জানিয়ে দিয়েছি। এছাড়াও করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি এবং দলীয় যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে দলীয়ভাবে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে করোনা নিয়ে গুজব তৈরি করে কেউ যাতে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও নজরদারি করছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করার জন্য সারাদেশে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কেউ যেনো গুজব ছড়াতে না পারে সেজন্য সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা হচ্ছে।