দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে অঘোষিত লকডাউন চলছে । বন্ধ রয়েছে বেশির ভাগ কল-কারখানা। এই অবস্থায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কম। তবুও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ঘটছে লোডশেডিংয়ের ঘটনা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
লোডশেডিংয়ের বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পিক আওয়ারে নয় হাজার মেগাওয়াট চাহিদা হলেও গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগছে। তবুও কেন লোডশেডিং হবে?
সোমবার বিদ্যুৎ বিভাগের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিরাও কেউ কেউ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে বলেছেন, এখন চাহিদা কম। উৎপাদন ভালো আছে। তারপরও লোডশেডিং কাম্য নয়।
এসময় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন প্রতিমন্ত্রী।
সভায় মহামারির সময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সমস্যা ও সম্ভাব্য সমাধান, বিভিন্ন সময়ে করা চুক্তিগুলো ও এর আওতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে দ্রুত গ্রাহকদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
রোস্টার করে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিকে নির্দেশ দেন নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, আগামীতে ঝড়-বৃষ্টি হবে, সচেতন থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করে বিদ্যমান প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স নামক কোম্পানি করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, যৌথ বিনিয়োগে এরূপ কোম্পানি হলে আমাদের সক্ষমতা অনেক বাড়তো। তিনি এ সময় গ্রিড সাব স্টেশনগুলো নিয়মিত মেরামতের নির্দেশ দেন।
একটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, এখন চাহিদা কম। উৎপাদনও ঠিক রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে লোডশেডিং হওয়াটা কাম্য নয়। সাধারণত বিতরণ ত্রুটির জন্যই এমন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে ঝড় বৃষ্টির কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমাধান করার। তিনি বলেন, লকডাউন চলছে এরমধ্যে বিদ্যুৎকর্মীরা করোনার ভয়ও পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা নির্দেশ দিয়েছি বিতরণ ত্রুটি দ্রুত সারিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল করতে হবে।
ভার্চুয়াল এই সভায় এ সময় অন্যান্যের মাঝে বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ, পিডিবির চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন, আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এবং দপ্তর ও কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।