ঢাকা : আজই তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা গত দুই দিনে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের পর আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল। এর ঠিক আগ মুহূর্তে কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন তিনি।সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাটের গুলশানে বাসভবনে এ বৈঠক হয়।সভায় অংশ নেন- দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক।
সূত্র জানায়, সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় নিশা দেশাই বলেছেন, আমার মনে হচ্ছে জঙ্গিবাদ নিয়ে সরকারের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে এবং এটা ইতিবাচক।সরকার এখন মনে করছে জঙ্গি হামলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের একটা যোগসূত্র থাকতে পারে।সরকারের এই অবস্থানকে অগ্রগতি হিসাবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র-যোগ করেন নিশা দেশাই ।
এর আগে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাংলাদেশের জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে বিদেশি সম্পৃক্ততা উড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল।তবে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর পুলিশের আইজি শহীদুল হক সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বিশ্ব এখন উন্মুক্ত।ফলে বাংলাদেশের জঙ্গিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ থাকতেও পারে।আমরা তা উড়িয়ে দিচ্ছি না।এছাড়া এর আগে যে কোনো জঙ্গি হামলার পর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং এমপিরা যেভাবে বিরোধী দলকে দায়ী করতেন কিন্তু গুলশান অ্যাটাক ও শোলাকিয়ার ঘটনার পর সেই প্রবণতা দেখা যায়নি।সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যেও বিষয়টি উঠে এসেছে।
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিসওয়াল বলেছেন, জঙ্গিবাদ বিশ্বের যেখানেই থাকুক না কেনো তা মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
অতীতে বাংলাদেশ সরকার এই সমস্যাকে স্রেফ দেশের ভেতরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফসল মনে করলেও বর্তমানে এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক যে একটি যোগসাজশ রয়েছে তা মেনে নিতে শুরু করেছে। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় কারিগরি ও শিক্ষা-প্রশিক্ষণভিত্তিক সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে সাংবাদিকদের কাছেও জানিয়েছেন নিশা দেশাই।তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের এই হুমকি বৈশ্বিক, তার বৈশ্বিকভাবেই এর মোকাবেলা করতে হবে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, এখন সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বৈঠকে সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেন, একটি বিষয় স্পষ্ট দেশে এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ রয়েছে, এ অবস্থার নিরসনে সরকারের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরই মত দেন তারা।