দেশের পোশাক কারখানাগুলোও করোনাভাইরাসের কারণে চলমান সাধারণ ছুটির মধ্যে বন্ধ রয়েছে । এর মধ্যেই ২৬ এপ্রিল থেকে পোশাক কারখানা চালু হচ্ছে বলে একটি খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি স্পষ্ট করেছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ। জানিয়েছে পরিস্থিতির উন্নয়ন হলেই কেবল নির্ধারিত তারিখে কারখানা খুলবে।
শুক্রবার সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিজিএমইএ এর সদস্যভুক্ত কারখানাগুলো খোলা রাখার বিষয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন তথ্য প্রচারিত হচ্ছে । এ ব্যাপারে বিজিএমইএ এর অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট । কারখানা চালু করার আগে আমাদের নিজেদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে হবে। যদি সার্বিকভাবে মহামারি করোনা পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়, তাহলে সঠিক সময়ে কারখানা খুলে দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এ মূহুর্তে আমাদের প্রথম ও একমাত্র অগ্রাধিকার হচ্ছে আমাদের শ্রমিক ভাইবোনদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখা।’
গত ১০ এপ্রিল বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক এবং নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) সভাপতি সেলিম ওসমান স্বাক্ষরিত যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে সদস্য কারখানা মালিকদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানান যাচ্ছে যে, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের ছুটির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহ আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এ সময়ে মধ্যে বেতন দেওয়ার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলা রাখার প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে স্ব স্ব অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ/বিকেএমইএ), কল কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শিল্প পুলিশকে অবহিত করতে হবে।‘
এদিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত ৮৭ ভাগ কারখায় শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দেয়া হয়েছে জানিয়ে সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, যেসব কারখানায় বেতন দেয়া হয়নি তারা মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা। যারা বড় ক্রেতাদের কাজ করেন না। আমরা সব শ্রমিকের বেতন দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। কিছু কারণে বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে সব ব্যাংকের শাখা খোলা না, পুরো দেশটি এক প্রকার লকডাইন, গণপরিবহন বন্ধ, এত বাধা সত্ত্বেও বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত ৮৭ শতাংশ কারখানায় বেতন দেয়া হয়েছে। বাকি কারখানার বেতন ২২ এপ্রিলের মধ্য দিতে পারবো বলে আশা রাখি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সরকার প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব অফিস আদালত বন্ধ রেখে সারাদেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সরকারি ভাষায় সেই ‘ছুটির’মেয়াদ এরপর বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। পরে তৃতীয় দফায় সেই ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর আবার সেটা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।
এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় ২৬ এপ্রিল থেকে সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার আশা খুবই ক্ষীণ। চলমান সাধারণ ছুটির মেয়াদ আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে গার্মেন্টসের ছুটিও বাড়বে বলেই জানালেন সংশ্লিষ্টরা।