মানুষের চলাচল করোনার কারণে সীমিত করার হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজে মুসল্লিদের না যাওয়ার নির্দেশনা আছে। এই নির্দেশনা মেনে আজ দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো সীমিতকারে জুমার নামাজ আদায় হয়েছে মসজিদগুলোতে।
যে কারণে পথেও মুসল্লিদের
ভিড় ছিল না খুব একট। তবে যারা বের হয়েছিলেন নামাজের জন্য তাদের মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরাও দেখা গেছে। করোনার কারণে স্থবিরতা এসেছে জনজীবনে। নিষেধাজ্ঞা থাকা সেই ছাপ পড়েছে মসজিদগুলোতে। আগে জুমার দিন মুসল্লিদের মসজিদ মুখী যতটা ভিড় দেখা যেতো এখন সেটা নেই।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গত ৬ এপ্রিলের নির্দেশনা অনুযায়ী, পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ পাঁচজনকে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।
একইভাবে জুমার নামাজেও খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ দশজন নিয়ে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ীই আজ দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো জুমার নামাজ আদায় হয়েছে মসজিদগুলোতে। তবে কিছু কিছু জায়গায় এর ব্যতিক্রমও দেখা গেছে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও অনেকে মসজিদে গেছেন।
শুধু উপস্থিতি কমই নয়, জুমার নামাজের বাংলা বয়ানকে নিরুৎসাহিত করে সংক্ষিপ্ত খুতবার পর নামাজ পড়ার জন্য বলেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিশেষজ্ঞ আলেমরা।
শুধু নামাজ নয়, সব ধর্মের ব্যক্তিদের ঘরে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। আর সারাদেশে ওয়াজ মাহফিলসহ অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদগুলোতে দেখা গেছে, আজানের আগেই খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ দশজন মসজিদের ভিতরে ঢুকেছেন। বেলা ১২টায় আজান হবার পরপরই মূল ফটক ছিলো তালাবদ্ধ। অনেক মসজিদে একটার আগেই জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে জুমার দিনে আগে হাজার হাজার মুসল্লি আদায় করতো। কিন্তু এবারও গত জুমার মতো নিঃসঙ্গ ও নিথর অবস্থা দেখা গেছে। প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ আদায়ে সরকারের নির্দেশনায় লোকারণ্য বায়তুল মোকাররম আজ ছিল জনশূন্য। অনেকে নামাজে এলেও পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয়। দশজন মুসল্লি হয়ে গেলে মসজিদের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জুম্মার নামাজের আগে মোহাম্মদপুরের আক্কাস নগর জামে মসজিদের সামনে কথা হয় কয়েকজন মুসল্লির সঙ্গে। তারা আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের সামনে এসেছেন। বলেন, গত জুমায় একবার মসজিদে নামাজ পড়তে পারিনি। ভাবলাম এই জুমায় নামাজ আদায় করতে পারব। কিন্তু দরজায় তালা দেওয়া। ভিতরে থেকে বলা হয়েছে দশজন হয়ে গেছে বাড়িতে গিয়ে নামাজ আদায় করেন।
একজন প্রবীণ মুসল্লিরা বলেন, ‘সারাজীবন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেছি। এখন মনটা খুব কান্দে মসজিদে নামাজ পড়তে।’
এসময় মুসল্লিরা ভিতরে না গিয়ে বারান্দায় নামাজের আহ্বান জানালেও তাতে সায় দেয়নি মসজিদ।
মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদের মুয়াজ্জিম বলেন, ‘সরকার থেকে নির্দেশনা মেনে আমরা নামাজ আদায় করছি। দশজনের বেশি পড়ার সুযোগ নেই। আর সবাইকে তো বাসায় নামাজের আহ্বান জানানো হয়েছে। তারপরও কেউ উপস্থিত হলেও আমরা ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছি না।’