ধারণা ছিল, বাড়িতে অফিসের কাজ আরও বেশি স্বাধীনতা দেয় তাদের । করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি হওয়ার আগে অনেকেই অফিসের কাজ বাড়ি থেকে করাকে কম চাপ মনে করতো । এটা কেন হবে না কারণ, এখানে সারাক্ষণ কাজের মধ্যে না থাকলেও হয় আবার বাচ্চাদের কাছাকাছি থাকা যায়। এছাড়া কিছু খারাপ সহকর্মীদের থেকে দূরেও থাকা যায়। যদিও ঘরবন্দি হওয়ার আগে ঘরে কাজ করার বিষয়টি স্বপ্নের মতো শোনাতো।
কিন্তু সেই স্বপ্নের মতো বিষয়টি এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। মনের কল্পনা সব বাস্তবে দেখা দিচ্ছে। আর ঘরে বসে কাজ করা অফিসের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ডে কেয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাচ্চারাও ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। শিক্ষকরা বাচ্চাকে বাড়িতে বসে অনলাইনে ক্লাস করার ব্যবস্থা করে দিতে বাবা-মার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। তাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় যেন নষ্ট না হয় সেই অনুরোধ করছেন।
এমন অবস্থায় আমরা কী করতে পারি?
বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করা আমাদের সকলের জন্য নতুন এবং এতে অনেকেই উদ্বিগ্ন ও অস্থির হয়ে উঠেছেন। এটার জন্য ভারতের ব্যাঙ্গালোরের লাফেমি হসপিটালের কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট সানা রুবিয়ানের মতে, বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করার জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করছেন, যার ফলে
চাপ বাড়ছে। প্রতিটি দিনের জন্য একটি কর্মসূচি বজায় রাখা জরুরি। যে কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে করা উচিত। নিয়মিত অন্তত ২০ মিনিট ব্যায়াম করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ব্যায়াম করার সময় এন্ডোরফিনস নামক একটি হরমোন প্রকাশিত হয় যা একটি খুশির হরমোন হিসাবে পরিচিত। সুতরাং আপনি কেবল শারীরিকভাবে নিজের যত্ন নিচ্ছেন না এটি আপনার মেজাজকে উন্নত করতে সহায়তা করছেন।
১. নিজেকে সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করুন। চারপাশে বাচ্চা থাকলে আপনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারবেন না। এজন্য বাচ্চা ছোট হলে অফিসকে অন্য সময়ে কাজ করার ব্যাপারে জানিয়ে রাখুন। আর বাচ্চা একটু বড় হলে তাদেরকে কাজের সময় ডিস্টার্ব না করার ব্যাপারে বুঝিয়ে বলুন।
২. ঘরের দুইজনই কাজ করলে, দিনের পরিকল্পনা সাজিয়ে নেয়া উচিত। কে কাজ করবে এবং কে রান্না করবে, কে বাচ্চাদের দেখাশুনা করবে এবং কে ঘরের কাজ করবে এগুলো সমন্বয় করে নিলে অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।
৩. একটি রুটিন তৈরি করুন। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। সকালেই বাচ্চাদের গোসলসহ যাবতীয় কাজ করে ফেলার চেষ্টা করুন। এরপর বাচ্চাদেরকে ধাঁধার বই বা রঙিন বই দিন, খেলতে দিন এবং কিছু দেখতে দিন। এসময় একটু বেশি টেলিভিশন বা মোবাইলে কিছু দেখলে নিজেকে অপরাধী মনে করার কোনো কারণ নেই। এই সময়ে বাচ্চাদের ভালো কিছু দেখতে দিতে পারেন।
৪. দৈনিক খাবারের একটি মেন্যু আগের রাতে গুছিয়ে রাখুন। তাতে পরবর্তী দিনে খাবার তৈরি ও বাকি কাজগুলোতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।
৫. তবে অফিসের কাজের জন্য সন্তানকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তাদের স্বাস্থ্যের জন্যও ব্যায়াম জরুরি। তাদের দিনের সময় মজার করতে তাদেরও কিছু সময় দিন। এটি হ্যাপি হরমোন প্রকাশ করবে এবং আপনাকেও খুশি রাখবে!