সারা বিশ্ব থমকে আছে করোনাভাইরাসের প্রভাবে। করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশেও সবকিছু থমকে গেছে। সবকিছু বন্ধ। ঘরবন্দি মানুষ। নিম্নআয়ের মানুষের নানাভাবে সহায়তা পেলেও আড়ালে থেকে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো। যারা মুখ খুলে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা বলতে পারছেন না। পর্দার আড়ালে থাকা এসব মানুষের মুখে আনন্দের হাসির ছবি ফোটাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি- ২০০২ ব্যাচের বন্ধুরা।
দেশে এবং বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধুরা মিলে একশো এমন মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শনিবার দিনভর রাজধানীতে এমন শতাধিক মধ্যবিত্ত পরিবারে মেহমান হিসেবে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যান তারা।
উদ্যেক্তাদের একজন মো. তানভীর রহমান। বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি নানা সময় বিপদে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো কষ্টে থাকলেও কাউকে বলতে পারে না। তাই আমরা চিন্তা করেছি তাদের বাসায় জিনিসপত্র নিয়ে গেলে তারা লজ্জা পেতে পারেন।
তানভীর বলেন, এসব পরিবারের আত্মসম্মানবোধকে সম্মান জানাতে আমরা ‘মেহমান’ নামে একটি উদ্যোগ নিয়েছি। যার অংশ হিসেবে ১০০ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারে মেহমান হয়ে তাদের বাড়িতে হাজির হয়েছি। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিত্যদিনের খাদ্যদ্রব্য সামগ্রী। এতে তাদের মুখে কিছুটা হাসিও ফুটেছে। গতানুগতিক সহায়তার মতো না হওয়া তারা কিছুটা স্বস্তিও পেয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের জন্য পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি পেঁয়াজ, এক লিটার সয়াবিন তেল, একটি লাইফবয় সাবান, এক কেজি আটা ও এক কেজি লবন।
সুত্রাপুর থেকে পোস্তগোলা ব্রিজ পর্যন্ত পরিচিতদের কষ্টে আছেন কিন্তু কারো কাছে বলতে পারছেন না তাদের খুঁজে বের করে সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তবে পুরো আয়োজনে তারা কোথাও কোনো ছবি তুলেননি। কারণ কোনোভাবে ছবি প্রকাশ্যে এলে পরিবারগুলো মর্মাহত হতে পারে। সামনেও ‘মেহমান’ উদ্যোগের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তানভীর।
উদ্যোক্তারা জানান, বন্ধুদের নিজেদের এমন উদোগ এটাই প্রথম নয়। ১০৩ জনের বন্ধু মিলে প্রতি মাসে সঞ্চয় করে সেখানকার অর্থ দিয়ে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে অসহায় মানু্ষের উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেন। সম্প্রতি একজন নারীকে সেলাই মেশিন কিনে দেয়া হয়েছে এই উদ্যোগ থেকে।