যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের এই অন্য পৃথিবী দেখতে কেমন? মাটির ২৬ ফুট নীচে অবস্থিত এই অন্য ‘পৃথিবী’ ১৫ হাজার বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে রয়েছে। মাটির নীচে আরও একটা ‘পৃথিবী’! সেখানে গাছ রয়েছে, বন্যপ্রাণী রয়েছে, আবার দিন-রাতও হচ্ছে পালা করে!

আসলে পুরোটাই কৃত্রিম। তবে দেখে বোঝার উপায় নেই। মাটির নীচে অবস্থিত এই অন্য ‘পৃথিবী’ আসলে একটা বাড়ি। জেরি হেন্ডারসন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি অ্যাভন প্রোডাক্ট-এর অধিকর্তাও ছিলেন। ১৯৭৯ সালে এই বাড়িটা বানান তিনি। হেন্ডারসনের চিরকালই ভূগর্ভস্থ বাড়ির প্রতি ঝোঁক ছিল।

১৯৮৩ সালে মৃত্যু হয় তার। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী ভূগর্ভস্থ বাড়িতে থাকতেন না। বরং এই বাড়ির ঠিক উপরেই নিজের জন্য একটা বাড়ি বানিয়ে নেন। ১৯৮৯ সালে তার মৃত্যু হয়। তত দিন তিনি উপরের বাড়িতেই থাকতেন।

তার পর বেশ কয়েক বার হাত বদল হওয়ার পর লাস ভেগাস সোস্যাইটি প্রেসিডেন্ট মার্ক ভোয়েলকাল ওই বাড়িটি কিনে নেন। সেখানে থাকতে শুরু করেন তিনি। আর মাটির নীচের বাড়িটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আপাতত এই সম্পত্তি হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে লাস ভেগাস। যার মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩৭ কোটি টাকা।

মাটির এত গভীরে এই বাড়ি বানানোর জন্য ১৫ হাজার বর্গ ফুটের কংক্রিট এবং স্টিলের আয়তাকার বাঙ্কার তৈরি করতে হয়েছে প্রথমে। তার মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে বাড়ি।

বাইরের জগতে যা রয়েছে, শিল্পীর সৌজন্যে সবটাই এই ভূগর্ভস্থ জগতে রয়েছে। যেমন পাহাড়, পাহাড়ের মাঝ দিয়ে নীচে নেমে এসেছে জলধারা। আবার কোথায় বনে ছুটে বেড়াচ্ছে হরিণের দল। আর আকাশ ছোঁয়া বিশালাকার গাছ।

দুটো বেড রুম, তিনটি বাথরুম, গোলাপি রঙের একটা আধুনিক রান্নাঘর এবং বাড়ির সামনে খোলা জায়গা। সেখানে পায়ের নীচে সবুজ ঘাসে ঘেরা। বাড়ির সামনে খোলামেলা জায়গায় রয়েছে একটি সুন্দর সুইমিং পুল, তার পাশে আবার রয়েছে ডান্স ফ্লোর।

এ ছাড়াও রয়েছে স্পা, বার, বারবিকিউ। ঘরে বসেই প্রকৃতির শোভা উপভোগ করতে পারবেন। বাড়ির চারপাশে রয়েছে বিশাল পাহাড় আর জঙ্গল। অর্থাৎ বাইরের জগতে ঠিক যেমনটা প্রকৃতির মাঝে নিজের স্বপ্নের বাড়ি কল্পনা করেন, তেমন সব কিছুই রয়েছে মাটির নীচে।

আর সবচেয়ে বিস্ময়ের হল, এই বাড়ির লাইটিং ব্যবস্থা এতটাই উন্নত প্রযুক্তিতে করা হয়েছে, বাইরের দিন-রাতের সঙ্গেই পালা করে এখানেও দিন-রাত হয়। তেমন ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থাও খুব উন্নত। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া প্রয়োজন, মাটির ২৬ ফুট নীচে বাঙ্কারের মধ্যে গড়ে তোলা এই বাড়ি পারমাণবিক হামলা থেকে সুরক্ষা দেবে না। সূত্র: আনন্দবাজার

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031